প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: এসএসসির (WBSSC) পরীক্ষার দিনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ! স্ত্রীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যু হল স্বামীর! অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচল মেয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রবিবার মুর্শিদাবাদের ভাকুড়ি ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর। স্বামীর মৃত্যুসংবাদে শোকের ছায়া নেমে এল পরিবারে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নিল স্থানীয় পুলিশ।
ঘটনাটি কী?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ রবিবার মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে স্ত্রীকে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মাদ্রাসা স্কুলের শিক্ষক। ঘড়ির কাঁটায় দুপুর তখন প্রায় ১ টা, সেই সময় ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। খড়বোঝাই যন্ত্রচালিত ভ্যান গাড়ির সঙ্গে আচমকা ধাক্কা লাগে বাইকের। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় ছিটকে পড়ে শিক্ষক মণিরুল ইসলাম। গুরুতর জখম হন তিনি। অন্যদিকে রাস্তার পাশে কাদায় পড়ে যায় তাঁর মেয়ে তাই সে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছে ৷ মণিরুলকে বাঁচাতে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন এবং মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ কিন্তু সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷
বিচলিত হয়ে পড়েন স্ত্রী
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মণিরুল ইসলামের বাড়ি খড়গ্রাম থানার শঙ্করপুরে। দীর্ঘদিন ধরে কর্মসূত্রে ভাকুড়িতে থাকতেন। সেখানকার একটি মাদ্রাসা স্কুলে শিক্ষকতা করতেন মণিরুল ইসলাম৷ স্ত্রী সেলিনা বিবি এবারই প্রথম এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন ৷ এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে৷ মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে ফিরছিলেন মণিরুল, তখনই ঘটে এই ভয়ংকর দুর্ঘটনা। এদিন সেলিনা বিবি পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে স্বামী-মেয়েকে দেখতে না পেয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন ৷ পরে এক আত্মীয় তাঁকে স্বামীর দুর্ঘটনার কথা জানান। এরপর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে স্বামীর মৃত্যুসংবাদ জানতে পেরে ভেঙে পড়েন সেলিনা৷
আরও পড়ুন: টোটোয় উঠে গৃহবধূর শ্লীলতাহানি গোঘটের তৃণমূল নেতার! প্রতিবাদে পথ অবরোধ স্থানীয়দের
দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বহরমপুর থানার আইসি উদয়শঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর যন্ত্রচালিত ভ্যান-সহ চালককে আটক করা হয়েছে ৷ চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে মৃতের সহকর্মী জয় নারায়ণ দত্ত বলেন, “আজ স্কুল ছুটি ছিল ৷ আমি খবর পেয়ে ছুটে আসি ৷ তার আগেই মণিরুল সাহেবকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল৷ পরীক্ষার পর স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল মণিরুল ইসলামের৷ কিন্তু সবটাই ঘেঁটে গেল।”