মাঝপথেই ফিরল রাশিয়া থেকে ভারতগামী তেলবাহী জাহাজ, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার জের?

Russia Oil Import

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাশিয়া থেকে তেল কেনা (Russia Oil Import) নিয়ে ভারতের উপর দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তা সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমায়নি। এরই মধ্যে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। হ্যাঁ, রাশিয়া থেকে ভারতের অপরিশোধিত তেল বহনকারী একটি ট্যাঙ্কার বাল্টিক শহরে হঠাৎ করেই তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে, যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর কি তাহলে রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলি ভারতে তেল আমদানি বন্ধ করতে চলেছে? কী বলছে বিশেষজ্ঞরা?

হঠাৎ করেই গতিপথ পরিবর্তন তেল বহনকারী ট্যাঙ্কারের

ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ফুরিয়া নামের ওই জাহাজটি রাশিয়ার প্রিমর্স্ক বন্দর থেকে 7 লক্ষ 30 হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল লোড করেছিল। কথা ছিল ভারতের গুজরাটের সিক্কা বন্দরে ওই তেল নামানোর। তবে ডেনমার্ক এবং জার্মানির মধ্যবর্তী ফেহমারন বেল্টে পৌঁছনোর পরই ট্যাঙ্কারটিতে রুট পরিবর্তন করে নেয় এবং পরে তার গন্তব্যস্থল নির্ধারণ করা হয় মিশরের পোর্ট সাইদ। সে জন্যই বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে সম্ভবত জাহাজটির রুট পরিবর্তন।

এদিকে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, রোসনেফ্ট এবং লুকোয়েল সহ প্রধান রাশিয়ান জ্বালানি কোম্পানিগুলিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আগামী 21 নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত লেনদেন বন্ধ করতে হবে। আর এটি ভারতের রাশিয়ান তেল আমদানির উপরেও প্রভাব ফেলবে।

সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলির শোধনাগুলির উপরেও পড়বে প্রভাব

উল্লেখ্য, বেসরকারি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত উভয় ভারতীয় তেল শোধনাগার এখন রাশিয়ান সরবরাহকারীদের সাথে চুক্তি করতে চাইছে। প্রাথমিক ইঙ্গিত অনুযায়ী, ভারতে রাশিয়ান তেল আমদানি অনেকটাই কমতে পারে। ভারতে মূলত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন, ভারত পেট্রোলিয়াম, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের মতো তেল বিপণন সংস্থাগুলি দেশের তেল শোধনাগার ক্ষমতার সিংহভাগ দখল করে থাকে। আর যদি তেল আমদানি কমে তাহলে তারা বিরাট ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আরও পড়ুনঃ ‘মোদীকে আমার বাবার মতোই দেখতে!’ ‘হি ইজ আ কিলার..’, এ সব কী বললেন ট্রাম্প

বলাবাহুল্য, ইউক্রেনের যুদ্ধের সময় থেকেই ভারত রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের সবথেকে বড় ক্রেতা হিসেবে নিজেদেরকে দেখিয়ে আসছে। আমদানি বিল হ্রাস, পরিশোধন মার্জিন উন্নত করার ক্ষেত্রেও বিরাট প্রভাব ফেলছে ভারত। আর এই সরবরাহ শৃঙ্খল অব্যাহত হওয়ার ফলে শোধনাগারগুলিকে মূলত মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাকে ব্যয়বহুল বিকল্প হিসাবে ভাবতে বাধ্য করা হতে পারে। তবে আজকের এই জাহাজের গতিপথ পরিবর্তন মার্কিন বাজারের চাপে পড়ে কিনা তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি।

Leave a Comment