সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মানুষের বাড়িতে কল্যাণীতে পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে গ্যাস (PNG Gas Kalyani)। আর এই পরিষেবা পেয়ে বহু মানুষ খুশি। এরকমই ভাবছেন তো? সে গুড়ে বালি! আসলে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পরিষেবা নিয়ে সামনে এমন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে এসেছে যে যেটি সম্পর্কে শুনলে আপনিও চমকে উঠবেন বৈকি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এরকম নতুন পদ্ধতিতে গ্যাস নেওয়ার বিষয়ে মানুষ প্রস্তুত নন বা আগ্রহী নন? আসলে প্রশ্ন উঠছে এখনো অবধি কল্যাণী পুরসভার অন্তর্গত মাত্র ১১টি বাড়িতে এই নতুন গ্যাস সংযোগ গিয়ে পৌঁছেছে। তবে প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল ১০০টি। হঠাৎ কী হল? মানুষ কি এটা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নন? উত্তর খুঁজতে শুরু করেছে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি।
সূত্রের খবর, রান্নাঘরে ব্যবহার্য পাইপের গ্যাস পরিষেবা শুরুর পর তিন সপ্তাহ কাটলেও শনিবার পর্যন্ত কল্যাণী পুরসভার মাত্র ১১টি বাড়িতে সংযোগ দেওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল ১০০টি দেওয়ার। যদিও সেই লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১১% কাজ হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কর্মর্তারা। হঠাৎ কী এমন হল যে মানুষ এই গ্যাস বাড়িতে নিতে চাইছেন না? সেই বিষয়ে ইতিমধ্যে কারণ খুঁজতে শুরু করেছেন মূল উদ্যোগী সংস্থা বেঙ্গল গ্যাস। আর উত্তর কিছুটা পেয়েওছে বটে। কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এখনও অবধি মানুষের মধ্যে এই পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পরিষেবার বিষয়ে পর্যাপ্ত সচেতনতা নেই। না হলে সিলিন্ডারের থেকে সুরক্ষিত এই গ্যাসের সংযোগ নিতে টালবাহানা কেন, তা বুঝতে পারছেন না তাঁরা।
মনোযোগ টানতে বিশেষ পদক্ষেপ বেঙ্গল গ্যাসের
মানুষের কাছে পাইপের গ্যাসকে আকর্ষণীয় করে তুলতে তাই বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে সংস্থা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিনে ১ টাকায় সংযোগ দেওয়া। আনা হবে কিস্তির সুবিধাও। এই প্রসঙ্গে বড় তথ্য দিয়েছেন বেঙ্গল গ্যাসের সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘কেন মানুষ সংযোগ নিচ্ছেন না, তার অনেকগুলি কারণ চিহ্নিত করেছি। এর মধ্যে একটা সচেতনতার অভাব। দ্বিতীয়ত, প্রথমে যাতে তাঁদের কম টাকা দিতে হয়, তার জন্য সম্ভবত ১ জানুয়ারি থেকে একাধিক প্রকল্প আনা হচ্ছে। তাতে অনেকে আগ্রহী হবেন বলেই আশা।’
আরও পড়ুনঃ রাজ্য সরকারের আর্জি খারিজ, ২০২৬-র জানুয়ারি থেকেই রেশনে কম সামগ্রী! কে কত পাবেন?
শীঘ্রই এই নিয়ে কল্যাণী, গয়েশপুর-সহ একাধিক এলাকায় প্রচারও চালানো হবে বলেও জানান অনুপম মুখোপাধ্যায়। সংস্থার মতে, ইতিমধ্যেই কল্যাণীর ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ৫০০-র মতো বাড়ির সামনে দিয়ে যে মূল লাইন গিয়েছে, সেটিতে গ্যাস পাঠানো হচ্ছে। ১৫০ বাড়িতে মিটারও বসেছে। কিন্তু তাদের প্রায় কেউই টাকা না দেওয়ায় পরিষেবা চালু হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, দামই কী আগ্রহ না দেখানোর মূল কারণ? অনুপমবাবুর মতে, ‘বর্তমানে পাইপের গ্যাস নিতে প্রথমেই ৬৩৫৪ টাকা দিতে হয়। তা অনেকের কাছেই সমস্যার। তাই জানুয়ারি থেকে দু’তিনটি প্রকল্প আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একটিতে দিনে ১ টাকা করে গ্রাহকদের থেকে নেওয়া হবে। প্রথমে ৩৫৪ টাকা দিতে হবে। অন্যটিতে প্রথমে ১৩৫৪ টাকা দিতে হবে। বাকিটা ছয় বা ১২ কিস্তিতে।’