বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দিল্লির পাথ কুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশে কার্যত উত্তাল গোটা দেশ। দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে, বেওয়ারিশ কুকুরদের দিল্লির রাস্তা থেকে সরিয়ে নিরাপদ পশু কেন্দ্রে পাঠানোর রায়কে একেবারে চ্যালেঞ্জ করেই বিগত দিনগুলিতে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বহু পশুপ্রেমী সংগঠন থেকে শুরু করে রাজধানীর বাসিন্দারা।
যদিও পথ কুকুরদের নিয়ে দেওয়া নির্দেশিকার বিষয়টি ভালভাবে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। আর এসবের মাঝেই, উত্তর প্রদেশ থেকে ভেসে আসছে বড় খবর।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, 2023 সাল থেকে 2025 আর্থিক বছরের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর অধীনে অন্তত 2 লক্ষ 84 হাজার পথ কুকুরকে ভ্যাকসিনেশন করানো হয়েছে। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করছেন, রাস্তার কুকুরদের কীভাবে সামাল দিতে হয় তার উজ্জ্বল উদাহরণ তুলে ধরেছে যোগীরাজ্য।
কুকুরদের টিকাকরণ করিয়ে বড় নজির গড়ল গড়ল যোগী রাজ্য
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, 2023-24 ও 2024-25 আর্থিক বছরের মধ্যে পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির হাত ধরে উত্তরপ্রদেশে 2 লক্ষ 84 হাজার 641টি পথ কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বহু পশুপ্রেমীর মতে, এই সংখ্যাটা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
কেননা, এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সামনে রেখে দিল্লির একটা বড় অংশের মানুষ যেখানে দাবি করছেন, দিল্লির বিপুল সংখ্যক কুকুরকে টিকাকরণ করানোটা সম্ভব নয়! সেই পর্বে দাঁড়িয়ে 2.8 লক্ষ পথ কুকুরকে টিকাকরণ করিয়ে বড় দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে উত্তর প্রদেশ, এমনটাই দাবি নেট নাগরিকদের একাংশের।
শুধু কি তাই? না। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, গোটা উত্তর প্রদেশ মিলিয়ে এই মুহূর্তে 17টি স্থায়ী প্রাণী জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র রয়েছে। আগামী দিনে আরও দুটি কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে লখনউ এবং গাজিয়াবাদে। এছাড়াও, 5,333টি কুকুর পোষার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে যোগী রাজ্যে।
জানা যাচ্ছে, গত দুবছরের মধ্যে রাস্তার কুকুরদের ভ্যাকসিনেশন করানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থায়ী পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তৈরি করতে ও রাজ্যের সরকারের তরফে বরাদ্দ করা হয়েছিল 34 কোটি টাকা। আর তা দিয়েই এখনও বেওয়ারিশ কুকুরদের ভাল রাখার কাজ চলছে বলেই খবর!
প্রসঙ্গত, পথ কুকুরদের ভ্যাকসিনেশন করানোর পাশাপাশি তাঁদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তৈরি করে জলাতঙ্ক রোগের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে যোগি রাজ্যে। এর পাশাপাশি কোনও অসুস্থ বা আক্রমণাত্মক কুকুরকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখলে নির্দিষ্ট হেল্পলাইনে ফোন করে সেই খবর জানাতে বলা হয়েছে রাজ্যবাসীকে।
অবশ্যই পড়ুন: সাধারণ দর্শকদের জন্য বরাদ্দ মাত্র ১৫,৩১২টি টিকিট, কলকাতা ডার্বি ঘিরে শুরু কালোবাজারি!
অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এমন উদ্যোগ দেশবাসীকে নতুন পথ দেখায়। এ প্রসঙ্গে সৌভিক দত্ত নামক এক পশুপ্রেমী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, কখনও গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়া, কখনও কোপানো, কোথাও আবার লাঠি দিয়ে মারধোর করা! এছাড়াও ড্রেনে ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা প্রায়শই ঘটে রাস্তার কুকুরদের সাথে।
তাই এই পর্যায়ে তাঁদের বাঁচানোর একটাই রাস্তা, জন্মনিয়ন্ত্রণ করে সংখ্যা কম রাখা। আসলে খাদ্য এবং বাসস্থান যেখানে সীমিত সেখানে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণই সেরা উপায়। সবশেষে ওই নেট নাগরিক লেখেন, এক্ষেত্রে পথ কুকুরদের কীভাবে বাঁচাতে হয় হাতে-কলমে তা প্রমাণ করে দেখাচ্ছে যোগী আদিত্যনাথ অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ সরকার!