সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ আজ থেকে ঠিক ৫ বছর আগে হলদিয়ার (Haldia Mother Daughter Murder Case) বুকে ঘটে গিয়েছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। মা ও মেয়েকে একসঙ্গে পুড়িয়ে মেরেছিল যুবক। ২০২০ সালে ঘটা এই ঘটনা সমগ্র বাংলাজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। এবার অবশেষে এই ঘটনায় রায়দান করল আদালত। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি দিয়েছেন বিচারক৷ আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
মা-মেয়েকে খুন যুবকের
২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে ঝিকুরখালী নদীর তীরে দুটি জ্বলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ জানায়, উদ্ধারকৃত মৃতদেহগুলি শনাক্তযোগ্য ছিল না। অর্ধেকেরও বেশি দেহাংশ পুড়ে চাই হয়ে গিয়েছিল। ঘটনায় পুলিশের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট মহিলাদের শনাক্ত করতে সাহায্য করে। পুলিশ মহিলাদের পোশাক, আনুষাঙ্গিক এবং অন্যান্য বিবরণের একটি বিবরণ পোস্ট করে এবং শীঘ্রই তাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যরা সাড়া দেয়। জানা যায়, মৃতাদের নাম ছিল রমা দে (৪০) এবং রিয়া (১৯)। অভিযোগ এই দুজনের সঙ্গেই নাকি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনের।
পুলিশের তদন্ত উঠে আসে, সাদ্দামের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল উত্তর চব্বিশ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রমা দে নামে ওই মহিলার৷ সেই সম্পর্কের সূত্রেই রমা এবং তাঁর ১৮ বছরের মেয়ে জেসিকাকে অভিযুক্ত সাদ্দাম হলদিয়ায় নিয়ে আসে। এবং সেখানেই একটি বাড়ি ভাড়া করে তাদের রেখে দেয়। রমার পাশাপাশি তাঁর মেয়ে জেসিকার সঙ্গেও সাদ্দাম প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। পরে সাদ্দাম জেসিকাকেই বিয়ে করে। মা-মেয়ে দুজনের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে গিয়ে তৈরি হয় গণ্ডগোল। একদিন সাদ্দাম মা ও মেয়ের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাঁদের অজ্ঞান করে দেয়। এরপর তাঁদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় সাদ্দাম বলে অভিযোগ।
রায় দিল তমলুক আদালত
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, অবশেষে ৫ বছর পর জোড়া হত্যাকাণ্ডের আজ শনিবার রায়দান দিল তমলুক আদালত। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি দিয়েছেন বিচারক৷ শুধু তাই নয়, বাকি ৩ অপরাধীকে ৩০২ (খুন) এবং ৩০১(প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিল তমলুক জেলা ও দায়রা আদালত।