মালদার বন্যায় ১০০ কোটির দুর্নীতি! CAG রিপোর্ট না দেওয়ায় সময় বেঁধে দিল হাইকোর্ট

Calcutta High Court

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একের পর এক দুর্নীতির কলঙ্কের অভিযোগ উঠে আসছে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। যার মধ্যে অন্যতম হল রাজ্যের ২০১৭ সালে মালদায় বন্যায় ক্ষতিপূরণের কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ। আর এই ঘটনায় এবার কাঠগড়ায় উঠল মালদহের জেলা প্রশাসন। অভিযোগ উঠছে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। উল্টে এই ক্ষতিপূরণের টাকা গিয়েছে অন্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ১০০ কোটি টাকার নয়ছয় হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে। এমতাবস্থায় তদন্ত করেও কেন রিপোর্ট প্রকাশ করছে না কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা CAG সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।

খবরের শিরোনামে ফের মালদহের ক্ষতিপূরণ দুর্নীতি

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মালদহের বেশ কয়েকটি এলাকায় বন্যা হয়েছিল, যার জেরে সেখানকার বসবাসকারী অনেকের নানা ক্ষতি হয়, আর সেই ক্ষতিপূরণ পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য। প্রশাসনের দাবি, প্রায় ১৪ হাজার ক্ষতিগ্রস্তকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। বরাদ্দ করা হয় কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু পরে ক্ষতিপূরণের নামে ওই টাকা স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলি আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। আদালত কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিলে তাঁরাও প্রথম রিপোর্টে পঞ্চায়েত প্রধান-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে।

প্রশ্নের মুখে CAG

CAG এর প্রথম রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে এসেছে কারা কারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। আর সেখানেই চক্ষু চড়কগাছ সকলের। দেখা যায় একটিও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ক্ষতিপূরণ পাওয়া ব্যক্তিদের নাম মিলছে না। অর্থাৎ এই এত কোটি কোটি টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে। এই অবস্থায় মামালকারীদের আইনজীবীদের দাবি, CAG এর আগে যে দ্বিতীয় অনুসন্ধান রিপোর্ট জমা দিয়েছে সেই রিপোর্ট তাদের দেওয়া হোক। কারণ ওতেই নথি এবং দুর্নীতির তথ্য রয়েছে। কিন্তু CAG সেটিকে প্রকাশ্যে আনতে চায়নি। গোপনীয় নথি বলে দাবি করে লুকিয়ে রাখা হয় সেই তথ্য। এবার সেই তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: এখনও বাকি ৫৩ হাজার কোটি টাকা! বাংলার বিপর্যয় মোকাবিলা ফান্ড নিয়ে দাবি তৃণমূলের

আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে মালদায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি পূরণের মামলাটি ওঠে। আর সেখানেই CAG এর দ্বিতীয় রিপোর্ট প্রকাশ্যে না নিয়ে আসার প্রসঙ্গ উঠে আসে। সেক্ষেত্রে বিচারক স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে পরবর্তী শুনানির দিন ক্যাগকে জানাতে হবে কেন ওই রিপোর্ট প্রকাশ করা যাবে না। এবং এই মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৫ ডিসেম্বর। যদিও সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর আইনজীবী দাবি করছেন, গোটা জেলার অন্তত ৮০ টি পঞ্চায়েতের প্রধান সহ সরকারি অফিসাররা প্রায় ১০০ কোটির ওই দুর্নীতিতে জড়িত তাই রাজ্যের সঙ্গে বোঝাপড়া করে CAG ওই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না। এবার দেখার পালা পরিবর্তী শুনানিতে এই মামলা কোন দিকে মোড় নেয়।

Leave a Comment