প্রীতি পোদ্দার, জলপাইগুড়ি: গত ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্য জুড়ে SIR বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দফায় দফায় প্রতিটি নির্বাচনক্ষেত্রে এনুমারেশন ফর্ম বিলি চলছে, এমতাবস্থায় ঘটল বড় এক অঘটন। এসআইআরের কাজের চাপে আবারও এক বিএলও-র আত্মহত্যার অভিযোগ উঠে এল। বুধবার সকালে মালবাজারে (Malbazar) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পরিবার।
SIR-র চাপে ফের বলি BLO
রিপোর্ট মোতাবেক আজ অর্থাৎ বুধবার, সাতসকালে বাড়ির উঠোন থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে এক বুথ লেভেল অফিসার শান্তিমুনি এক্কার। ৪৮ বছরের এই কর্মী আসলে পেশায় ছিলেন একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। তিনি জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার থানার রাঙামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নিউ গ্ল্যাংকো চা বাগান এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে SIR-র কাজ করতে নিত্য অসুবিধায় পড়ছিলেন তিনি। খাওয়া ঘুম রীতিমত উড়ে গিয়েছিল তাঁর। শান্তিমুনি এক্কার ছেলে ডি সুজা এক্কা ও স্বামী সুখু এক্কা দাবি করেন যে, শান্তিমুনি দেবী ভালো বাংলা লিখতে, পড়তে জানতেন না। তার পরেও SIR-এর কাজ করতে দেওয়া হয়েছিল। আর সেই চাপেই এই পরিণতি। পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
বিডিওকে বলেও মেলেনি সুরাহা
মৃতা বিএলও শান্তিমুনি এক্কার পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল যে মালবাজার ব্লকের যুগ্ম বিডিও-র কাছে গিয়ে এই কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন শান্তিমুনি। কিন্তু আধিকারিকরা তাঁর কোনো কথা গ্রাহ্য করেননি বলেই দাবি। এদিন মৃতার বাড়িতে দেখা করতে যান আদিবাসী কল্যাণ বিভাগের মন্ত্রী তথা মালবাজার বিধানসভার বিধায়ক বুলু চিক বড়াইক। তিনি বলেন, ‘SIR আতঙ্কে অনেক ভোটার আত্মঘাতী হয়েছেন। কাজের চাপে আজ বিএলও আত্মঘাতী হলেন। একটা পরিবার নষ্ট হয়ে গেল। এর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতেই হবে।’ এছাড়াও তিনি পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন।
আরও পড়ুন: ‘SIR আতঙ্কে বাংলাদেশ ফিরতে সীমান্তে ভিড় বাংলাদেশিদের!’ ভিডিও শেয়ার করলেন সুকান্ত
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে পূর্ব বর্ধমানে ব্রেন স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়েছিল মেমারির চক বলরামপুরের ২৭৮ নম্বর বুথের বিএলও নমিতা হাঁসদার। এমনকি কেরলেও একই অবস্থা দেখা গিয়েছিল। গত রবিবার অনীশ জর্জ নামে ৪৪ বছরের এক বিএলও আত্মহত্যা করেছিলেন। তিনি ছিলেন পেশায় শিক্ষক। তাঁর পরিবার এবং প্রতিবেশীদের অভিযোগ, এসআইআরের কাজের চাপেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আর তা থেকেই আত্মহত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত নেন তিনি। SIR চলাকালীন একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে আর এর নেপথ্যে SIR রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।