মাসুদ আজাহার, হাফিজ সইদকে ভারতে প্রত্যর্পণে রাজি! সিন্ধুর জল না পেয়ে পথে এল পাকিস্তান

প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: অবশেষে ভারতের বড় জয়! সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে এবার ভারতের কাছে মাথানত করল চিরশত্রু পাকিস্তান! লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ ও জইশ প্রধান মাসুদ আজাহারকে ভারতের হাতে তুলে দিতে অবশেষে রাজি হলেন তারা। ভারত বহু বছর ধরে পাকিস্তানের কাছে মাসুদ আজহার ও লস্কর প্রধান হাফিজ সইদকে তুলে দেওয়ার দাবি জানালেও ইসলামাবাদ বারবার সেই দাবি অস্বীকার করে এসেছে। শেষমেশ জলসংকটে পরেই সম্পূর্ণ খেলা ঘুরে গেল।

উল্টো সুর বিলাওয়াল ভুট্টোর!

রিপোর্ট মোতাবেক ভারতের অন্যতম মোস্ট-ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী হলেন মাসুদ আজহার। জইশ-ই-মোহাম্মদ প্রধান এই মাসুদ একের পর এক সন্ত্রাসবিরোধী কাজ করে এসেছে ভারতের বিরুদ্ধে। ২০০১ সালের সংসদ হামলা থেকে শুরু করে ২৬/১১ মুম্বই হামলা, ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তিনি।

কিন্তু সেই সময় পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো দাবি করেছিলেন যে মাসুদ আজহার পাকিস্তানে নেই বর্তমানে সে আফগানিস্তানে রয়েছেন। তবে এবার বিপুল চাপে পড়ে সম্পূর্ণ উল্টো সুর গাইলেন তিনি।

 প্রত্যর্পণের বার্তা পাকিস্তানের

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিলাওয়াল ভুট্টো জানিয়েছেন যে, “ভারতের সঙ্গে আলোচনায়, বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আলোচনায় বসতে আমরা প্রস্তুত।” একইসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, “সুসম্পর্কের নিরিখে লস্কর ই তইবার প্রধান হাফিজ সইদ ও জইশ ই মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজাহারকে আমরা প্রত্যর্পণ করতে রাজি আছি।”

অর্থাৎ এই মন্তব্যে বোঝাই যাচ্ছে যে এই দুই জঙ্গি এখনও পাকিস্তানে রয়েছে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান যতই দাবি করুক না কেন বার বার প্রমাণিত হয়েছে যে জঙ্গিদেরকে রীতিমতো বড় নেতা হিসেবে সন্মান করে থাকে।

প্রাপ্ত রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে এদিনের সাক্ষাৎকারে বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, “ভারত লস্কর ই তইবার প্রধান হাফিজ সইদ ও জইশ ই মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজাহারের বিরুদ্ধে সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। তবে সেক্ষেত্রে তাদের দোষী প্রমাণ করতে কিছু মৌলিক পন্থা অবলম্বনে অস্বীকার করেছে ভারত। তাই ভারতের প্রতিনিধি পাকিস্তানের আদালতে এসে উপযুক্ত প্রমাণ দিক। যদি ভারত এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করে তাহলে তারা জানাক। আমি নিশ্চিত যে পাকিস্তানের মাটিতে অপরাধী এই ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণে আর কোনও বাঁধা থাকবে না তাহলে।”

গ্রেফতার করতে রাজি পাকিস্তান

এদিনের সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী আরও দাবি করেছেন যে, “মাসুদ আজহারের কথা যদি বলেন আমরা ওকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে ওর আফগান জেহাদিদের সঙ্গে অতীত সম্পর্ক মাথায় রেখে বলতে পারি, আমাদের বিশ্বাস ও আফগানিস্তানেই রয়েছে। যদি ভারত সরকার আমাদের তথ্য দিতে পারে যে ও পাকিস্তানের মাটিতেই রয়েছে, আমরা তাহলে ওকে খুশি মনে গ্রেপ্তার করতে পারি। কিন্তু, ভারত সরকার তেমন কোনও তথ্য দিচ্ছে না।” এখন দেখার বিষয় এই মন্তব্যের ভিত্তিতে ভারত সরকার কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

আরও পড়ুন: বকেয়া DA দেওয়ার আগেই বেতন বৃদ্ধি! বড় সিদ্ধান্তের পথে রাজ্য সরকার

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান এখন বিশ্বের কাছে নিজেদের ভালো প্রমাণ করতে সন্ত্রাসবাদের আসল চিত্র ঢাকতে চাইছে। তার উপর ভারত সিন্ধুর জল আটকে দেওয়ায় বড় দুর্যোগের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। বারবার ভারতের কাছে অনুনয় বিনয় করার পর যেখানে কোনো সমাধান মেলেনি তাই এবার আসন্ন বিপদ বুঝে আলোচনায় বসার বার্তা দেওয়া হল ইসলামাবাদের তরফে। এখন দেখার পালা নয়া দিল্লি কীভাবে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে কোন বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

Leave a Comment