মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরি পেয়েই ভোলবদল শাশুড়ির, নবজাতকে নিয়ে একঘরে বারাসতের বৌমা

Barasat Medical College

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কিছুদিন আগেই বারাসত মেডিক্যাল কলেজে (Barasat Medical College) প্রীতম ঘোষের চোখ চুরির ঘটনায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বারাসত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ‘চোখ চুরি’-র অভিযোগে তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল যে তদন্তে নামে, তার রিপোর্টে উঠে আসে যে ইঁদুর জাতীয় কোনও প্রাণী মৃতদেহের চোখ খুবলে নিয়েছে। এক্ষেত্রে মানবিক হস্তক্ষেপের কোনো প্রমাণ নেই। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী, সরকারি অফিসে কাজের সুযোগ পেলেন প্রীতমের মা কৃষ্ণা ঘোষ। আর তাতেই সংসারে বাঁধল ব্যাপক অশান্তি।

চাকরি নিয়ে শাশুড়ি বৌমার অশান্তি

গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মৃত প্রীতম ঘোষের মা-কে ভূমি রাজস্ব দফতরে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই চাকরি যে পরিবারে ভয়ংকর অশান্তি ডেকে আনবে তা কেউই আজ করতে পারেনি। শুরু হয়ে গেল শাশুড়ি–বউমার বিবাদ। অভিযোগ, চাকরি পাওয়ার পর থেকেই নাকি প্রীতমের স্ত্রী কেয়া ঘোষ ও তার ১৯ দিনের শিশুকে প্রায় এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে। কোলে একরত্তি বাচ্চা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “শাশুড়ির তো চাকরি হয়ে গেল। কিন্তু আমার আর আমার বাচ্চার দায়িত্ব কে নেবে? মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করছিলেন, তখন ওরা বলে দিল আমি কাজ করতে পারব না।” ফলে প্রীতমের মৃত্যুর পর প্রশাসনিক তৎপরতা প্রশংসনীয় হলেও পরিবারের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন নতুন সঙ্কট তৈরি করছে।

অসহায় অবস্থায় কাটছে প্রীতমের স্ত্রীর

বৃহস্পতিবার প্রীতম ঘোষের মা কৃষ্ণা ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী তরফ থেকে পাওয়া ভূমি রাজস্ব দফতরে নিয়োগপত্রের জন্য ধন্যবাদ জানান। এরপরই সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “এই চাকরি না হলে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে যেত।” ইতিমধ্যেই চাকরিতে যোগদান করেছেন তিনি। কিন্তু এমতাবস্থায় সেই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিল। শাশুড়ি চাকরি পেলেও ১৯ দিনের শিশুকে নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় কাটছে প্রীতমের স্ত্রীর। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে সদ্য স্বামীহারা এই স্ত্রী, সন্তানের আদৌও কি দায়ভার নেবে শাশুড়ি।

আরও পড়ুন: মমতার ডাকে নবান্নে যাচ্ছেন না শুভেন্দু! কারণও জানালেন বিরোধী দলনেতা

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে চোখ চুরির অভিযোগেই হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন নিহতর পরিবার এবং স্থানীয়দের একাংশ। এরপর হাসপাতালের রিপোর্ট সামনে আসতেই আরও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তাঁরা। এদিকে নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। তাঁরাও স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে। বৃহস্পতিবারও তারা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভও দেখায়। তবে হাসপাতাল সুপারের আশ্বাস, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেদিকে কড়া নজর রাখা হবে।

Leave a Comment