সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতীয় রেলে এবার মিলবে নয়া অভিজ্ঞতা! হ্যাঁ, মুম্বাইবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে এবার বিরাট উদ্যোগ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। এবার খুব শীঘ্রই শহরের প্রতিটি লোকালে থাকবে এসি (AC Local)। শুধুমাত্র এসি নয়, বরং থাকবে বন্ধ দরজা, উন্নত নিরাপত্তা, আরামদায়ক ভ্রমণ, সবকিছুই। সবথেকে বড় কথা, এই পরিষেবার জন্য এক টাকাও বাড়তি খরচ করতে হবে না।
লোকাল ট্রেনেই মেট্রোর ছোঁয়া
এদিন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস বলেছেন, লোকাল ট্রেনে আমরা মূলত দুই ধরনের যাত্রার অভিজ্ঞতা তৈরি করতে চলেছি। একদিকে থাকবে পুরোপুরি এসি মেট্রো, যেখানে দরজা বন্ধ থাকবে। আর অন্যদিকে লোকাল ট্রেনগুলির দরজা বন্ধ থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ নতুন এসি কোস আসবে, পুরনো কোচগুলিকে রেট্রোফিট করা হবে না। আর এই উন্নত সুযোগ-সুবিধার জন্য ভাড়ায় কোনোরকম পরিবর্তন আনা হবে না। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ইতিমধ্যে এই পদক্ষেপকে সম্মতি জানিয়েছেন এবং তিনি খুব শীঘ্রই মুম্বাইয়ে এসে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারেন।
দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে বন্দরের কাজ
তবে শুধু লোকাল ট্রেনেই সীমাবদ্ধ থাকছে না মহারাষ্ট্র। এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, মেট্রো-3 প্রকল্প অক্টোবরের মধ্যেই পুরোপুরি চালু হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি নবি মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আগামী সেপ্টেম্বরের মাস নাগাদ শেষ হবে। এমনকি ভাধাওয়ান বন্দরের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, যা বিশ্বের প্রথম সারির দশটি বন্দরের মধ্যে একটি হয়ে উঠবে। আর এই বন্দর একবার গড়ে উঠলে মহারাষ্ট্র সহ পশ্চিম ভারতের সামুদ্রিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত খুলবে।
পড়াশোনা হবে 75% সস্তায়
শুধু পরিকাঠামোগত দিক থেকে নয়, বরং শিক্ষাক্ষেত্রেও মহারাষ্ট্র সরকার এবার বিরাট পরিকল্পনা নিয়েছে। দেবেন্দ্র ফড়নবিস জানিয়েছেন, নবি মুম্বাইকে এবার আধুনিক এডুকেশন সিটি তৈরি করা হবে। যেখানে বিদেশে পড়াশোনার খরচের মাত্র 25% খরচে একই মানের শিক্ষা মিলবে। তিনি আরো জানিয়েছেন, আমরা দশটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় আনতে চলেছি, যার মধ্যে পাঁচটি ইতিমধ্যেই এই চুক্তিতে সই করে ফেলেছে।
প্রসঙ্গত মুম্বাইয়ের ট্রেন দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই ঘটনার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, লোকাল ট্রেনের দরজা বন্ধ থাকার মতো ব্যবস্থা আনতে হবে। তিনি বলেছেন, মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এবং যাত্রা আরামদায়ক করতেই এরকম পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত এই রাজ্যে অপরাধের হার বর্তমানে 6.75% কমেছে এবং নাগপুরেই কমেছে 11%। পাশাপাশি নারী নির্যাতন 91% এবং ধর্ষণ মামলার 98% সঠিক তদন্ত হয়েছে। আর ড্রাগ কেসে গ্রেফতার হয়েছে 2000 জনের বেশি। পাশাপাশি বর্তমানে 13 জন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে এবং তদন্তের ক্ষেত্রে ফরেনসিক প্রমাণ ও 90 দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে।