প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে পুর নিয়োগ। ED-CBI-এর তদন্তে সামনে এসেছে অনেক প্রভাবশালীর কীর্তিকলাপ, আর তাই নিয়ে নির্বাচনের আগে বেশ চাপে আছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এমতাবস্থায় সেই তালিকায় সংযুক্ত হল আরও একটি, সেটি হল বালি পাচারের দুর্নীতি (Sand Smuggling Case)। তারই তদন্তে এবার পথে নামল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর উদ্ধার টাকার পাহাড়
গতকাল অর্থাৎ সোমবার বালি পাচার মামলায় রাজ্যের ২২টি ঠিকানায় বালি পাচার কাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের জন্য একযোগে অভিযান চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED। সেই সূত্রে এদিন সকাল আটটা নাগাদ মেদিনীপুরে বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বাড়িতে গিয়েছিল ইডি-এর বিশেষ টিম। আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, মোবাইল ও বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। বাড়ির ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় নাকি রাখা ছিল নোটের বান্ডিল, শেষ আপডেট অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ৬৪ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গোপীবল্লভপুরেও উদ্ধার কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা
অন্যদিকে একই দিনে অতিরিক্ত বালি তুলে পাচারের অভিযোগে ED বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নজরে ছিল আরও একটি বাড়ি। আর সেটি হল ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের নয়াবসানে জিডি মাইনিংয়ের কর্মী শেখ জহিরুল আলির বাড়ি। সাতসকালে ED হানা দেওয়ায় উদ্ধার হয় ১২ লক্ষ টাকা। স্থানীয়দের দাবি, প্রথমে সাইকেল সারাতেন জহিরুল। পরে ভিলেজ পুলিশের কাজ পান। সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে বালি তোলা ও সরবরাহের ব্যবসায় নামেন। গোপীবল্লভপুরে জহিরুলের পাড়ায়, একমাত্র তাঁর বাড়িটি বিশালাকার তিনতলা এবং চারপাশে সিসিটিভিতে মোড়া। আর তাতেই সন্দেহ বাড়ে, এবং তদন্তের জেরে বেরিয়ে আসে একাধিক তথ্য। এখন প্রশ্ন এই টাকা কি এতদিন বিভিন্ন হাত ঘুরে সাদা করা হচ্ছিল?
আরও পড়ুন: কবে প্রকাশিত হবে উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম পর্যায়ের ফলাফল, দিনক্ষণ জানাল শিক্ষা সংসদ
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে বর্ধমান রেঞ্জে জাতীয় সড়কে কয়েকটি বালি বোঝাই ট্রাক আটক করেছিল পুলিশ। চালকের কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে, GD মাইনিংয়ের জাল নথি দেখানো হয়। অভিযোগ উঠছে যেখানে রাজ্য সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত বালি খাদান থেকে রাজস্ব আসে সরকারের ভান্ডারে সেখানে সেই বালি খাদান থেকেই অতিরিক্ত বালি তুলে পাচার করা হচ্ছে। তাই বর্ধমানের থানায় FIR দায়ের করে পুলিশ। আর এবার সেই FIR-এর ভিত্তিতেই, ECIR রুজু করে, বালি পাচারের তদন্তে নামল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এখন দেখার পালা এই চক্র থেকে শাসকদলের কোনো প্রভাবশালী নেতার নাম উঠে আসে কিনা।