‘মোল্লারা সিংহাসন ছাড়ো!’ ইরানে সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামল জনগণ

Violence in Iran

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে ইরানে শুরু হয়েছে চরম অশান্তি (Violence in Iran)। হাজার হাজার মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে এবার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে, যা বিগত তিন বছরের মধ্যে দেশের সবথেকে বড় গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছে। এমনকি তাদের স্পষ্ট দাবি, মোল্লারা সিংহাসন ছেড়ে দাও! রাজধানী তেহরান সহ বেশ কয়েকটি প্রধান প্রধান শহরে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ একেবারে স্পষ্ট। এমনকি বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

কী কারণে এই অশান্তি?

আসলে দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির নেতৃত্বে প্রচলিত শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে আমজনতা। তাদের এই অসন্তোষের পিছনে মূল কারণ হল দেশের অর্থনীতির ধস। সম্প্রতি ইরানি মুদ্রা রিয়াল ডলারের তুলনায় ৪২,০০০ এর বেশি কমেছে। আর রিয়ালের এই ঐতিহাসিক পতনে সাধারণ মানুষ একেবারে চোখে সর্ষেফুল দেখছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রধান মোহম্মদ রেজা ফারজিনকে পদত্যাগ করতেও বাধ্য করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মালদা, শিলিগুড়ির পর এবার বাংলাদেশিদের জন্য হোটেলের দরজা বন্ধ করল বালুরঘাট

ইতিমধ্যেই মুসলিম এই দেশের মুদ্রাস্ফীতি ৪২ শতাংশের থেকে বেশি বেড়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। খাদ্য থেকে শুরু করে ওষুধ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দিনের পর দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর বছরের পর বছর অপেক্ষা করার পরেও অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না। এমনকি দিন যত এগোচ্ছে তত দেশের অবস্থা তলানিতে ঠেকছে। সেই কারণে কোনও আশা না দেখে দেশবাসী এখন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে এবং পথে নেমেছে।

সবথেকে বড় ব্যাপার, গত দু’দিন ধরে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে এগোচ্ছে। ২৯ ডিসেম্বর সোমবার তেহরান এবং মাশহাদে বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় সংঘর্ষ চলে। আর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে। বিশেষ করে মধ্য তেহরানে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রচারিত হচ্ছে, যেখানে একটি শপিং কমপ্লেক্সে লোকজনকে জোরে জোরে স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: সোনা, রুপোর দামে বড় ধস! খুশির জোয়ার মধ্যবিত্তদের মনে, আজকের রেট

ট্রাম্প কি তাহলে এর পিছনে কারণ?

বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, ইরানের বর্তমান সংকটে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কাজ করছে। কারণ, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের পর অনিশ্চয়তা, জাতিসংঘে নতুন নিষেধাজ্ঞা, আর পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে ট্রাম্পের চাপ পড়েছে। ফলে দেশের অবস্থা আরও খারাপের দিকে এগোচ্ছে। এমনকি মঙ্গলবার ট্রাম্প ইরানকে আরও এক সতর্কবার্তা দিয়েছে, যা দেশের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এখন দেখার, পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হয়।

Leave a Comment