বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: যুদ্ধ বাঁধলেই ভারতের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়াবে রাশিয়া। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সফরের আগেই বিরাট চুক্তিতে দুই হাত এক হল নয়া দিল্লি এবং মস্কোর (India Russia Defence Cooperation)। জানা যাচ্ছে, রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট নামক এক চুক্তিতে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে রাশিয়ার সংসদের নিম্নকক্ষ স্টেট দুমা। এই চুক্তির অধীনেই এবার থেকে, ভারত এবং রাশিয়ার সেনাবাহিনী, যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজের পারস্পরিক ব্যবহার সহ একে অপরকে সব রকম লজিস্টিক সহায়তা দেবে। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, এই চুক্তির অর্থ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে একে অপরের পাশে একপ্রকার বর্ম হয়ে দাঁড়াবে দুই দেশ।
স্টেট দুমার অনুমোদনের অপেক্ষাতেই ছিল চুক্তিটি
ফাস্ট পোস্টের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যেকার পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে গিয়েছিল চলতি বছরের একেবারে শুরুর দিকে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসেই। পরবর্তীতে গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিগুস্তিন ওই চুক্তি অনুমোদনের জন্য সেটিকে রাশিয়ার সংসদের নিম্নকক্ষ স্টেট দুমায় পাঠান। সেই মতোই গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার এই চুক্তিতে সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছে স্টেস্ট দুমা।
এই চুক্তি প্রসঙ্গে রাশিয়ার সংসদের নিম্নকক্ষ অর্থাৎ দুমার স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভোলোদিন একেবারে খোলাখুলি জানিয়েছেন, “ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক বহুদিনের। যা কৌশলগত দিক থেকে দু’দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই সম্পর্কের মূল্য বুঝি। এই অনুমোদন দুই দেশের মধ্যেকার কৌশলগত সহযোগিতাকে আরও জোরদার করবে।” ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ যুদ্ধ আবহে রাশিয়া এবং ভারতের মধ্যকার এই চুক্তি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
চুক্তির অধীনে কোন কোন সুবিধা পাওয়া যাবে?
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যেকার যে পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে সেই চুক্তির অধীনে দুই দেশের সেনাবাহিনী একে অপরকে সেনাঘাঁটি, বায়ুসেনা ঘাঁটি, বন্দর সহ অন্যান্য সব লজিস্টিক সুবিধা দেবে। এক কথায় বলতে গেলে, নয়া চুক্তির অধীনে কোনও দ্বিধা ছাড়াই অবাধে রাশিয়ার বুদ্ধজাহাজ ভারতের বন্দরে ঢুকে আসবে। একইভাবে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজও রাশিয়ার বন্দরে ভিড়বে। একই নিয়ম প্রযোজ্য স্থলসেনা এবং বায়ুসেনার ক্ষেত্রেও। একই সাথে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে একে অপরের পাশে দাঁড়াবে ভারত এবং রাশিয়া।
অবশ্যই পড়ুন: সুপার কাপের সেমিতে মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল ও পাঞ্জাব, কবে-কোথায় দেখবেন ম্যাচ?
উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলিতে পশ্চিমী দুনিয়ার নরমে গরমে হুঁশিয়ারিকে উড়িয়ে দিয়েই রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রেখেছে ভারত। যার কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বন্ধুত্বের নিরিখে বিরাট নজির গড়েছে এই দুই দেশ। তাছাড়াও সাম্প্রতিককালে যুদ্ধ নিয়ে গোটা বিশ্ব রাজনীতির যেভাবে উত্তাল তাতে ভারত এবং রাশিয়ার ক্রমাগত কাছে আসা তৃতীয় পক্ষের চিন্তার কারণ হবে সেটাই স্বাভাবিক।