রক্তাক্ত নেপাল! ফেসবুক ব্যানে ক্ষুব্ধ Gen Z-র পার্লামেন্টে ঢুকে বিক্ষোভ, নিহত ৮

Nepal

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি নেপাল (Nepal) সরকার ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্স সহ মোট 26 টি সামাজিক মাধ্যমের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং সেগুলি বন্ধ করে দিয়েছে। আর এ নিয়ে সোমবার সকাল থেকেই রাজধানী কাঠমান্ডু জুড়ে ছাত্র যুবদের তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

দুপুরে গড়াতেই আন্দোলন আরো হিংসাত্মক রূপ নেয়। প্রতিবাদকারীদের একাংশ ব্যারিকেড ভেঙ্গে সরাসরি নেপালের পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। আর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ গুলি চালালে 8 জনের মৃত্যু হয়। এমনকি অন্তত 80 জন আহত হয়। ইতিমধ্যেই কাঠমান্ডুর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে কার্ফু জারি করা হয়েছে।

নেতৃত্বে Gen Z

প্রসঙ্গত এই আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে তরুণ প্রজন্মকে। মূলত স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী বা নতুন প্রজন্মের যুবক যুবতীরা। অনেকের মতে, এই ক্ষোভ শুধুমাত্র ফেসবুক বন্ধ হওয়ার কারণে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা আর্থিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এমনকি রাজনৈতিক অস্থিরতারও অভিযোগ।

ফেসবুকের উপর নিষেধাজ্ঞা যেন সেই জমে থাকা ক্ষোভেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। সরকার যুক্তি দিচ্ছে, দেশকে নিরাপদ রাখতেই এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, সরকারের মূল উদ্দেশ্য বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন করা।

কেন বন্ধ হয়েছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ?

উল্লেখ্য, গত 28 আগস্ট নেপাল সরকার ঘোষণা করেছিল, আগামী সাত দিনের মধ্যে সমস্ত সামাজিক মাধ্যমকে সরকারের খাতায় নাম নথিভুক্ত করতে হবে। আর নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হলেও অধিকাংশ সংস্থা সেই নির্দেশ মানেনি। এরপরে 4 সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুক, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপ সহ মোট 26 টি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে হ্যাঁ, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা  জারি করা হয়নি। আন্দোলনকারীরা সেখান থেকেই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়িয়ে একজোট হতে থাকে।

সূত্র মারফৎ খবর, তাঁদের বিক্ষোভ হিংসাত্মক রুপ নিলে আন্দোলনের উদ্যোক্তারা এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, যারা পার্লামেন্টের ভিতরে ঢুকছে তাদের সঙ্গে আন্দোলনের কোনোরকম সম্পর্ক নেই। নির্দিষ্ট এলাকার পর মিছিল এগোনোর পরিকল্পনাও ছিল না বলে দাবি করছে তারা।

আরও পড়ুনঃ ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বদলে যাচ্ছে PhonePe, Paytm, GPay-র নিয়ম!

প্রসঙ্গত, নেপালের এই রাজনৈতিক অশান্তি নতুন কিছু নয়। মার্চ মাসে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে বড়সড় আন্দোলন হয়েছিল সেখানে। তখন সেনাও মোতায়েন করতে হয়। আসলে 2008 সালে 240 বছরের পুরনো রাজতন্ত্র ভেঙে গণতান্ত্রিক নেপালের জন্ম হয়। তবে সেখানে স্থায়িত্ব আজও আসেনি। 2015 সালে অনুমোদিত হয়েছিল নতুন ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান, আর গত 17 বছরের 13 বার সরকার পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে চেয়ার দখল করে রেখেছেন কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপালের নেতা কেপি শর্মা ওলি।

Leave a Comment