সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: হঠাৎ বিকট শব্দ, চারিদিকে ঘন ধোঁয়া আর আতঙ্কে ছোটাছুটি! হ্যাঁ, বুধবার বিকালে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের (Durgapur) সিটি সেন্টারের ম্যাক্সমুলার পথ এলাকা হঠাৎ করেই কেঁপে উঠল। স্থানীয় এক রিপোর্ট বলছে, একটি বাড়ির ভেতরে ফায়ার এক্সটিংগুইশার রিফিলিং চলাকালীন ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। আর তাতে গুরুতর জখম হন টেকনিশিয়ান দেবরাজ সোম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে দ্রুত দুর্গাপুরের গান্ধী মোড়ের এক বেসরকারি সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা?
আহত দেবরাজের সহকর্মী আজাদ খান জানিয়েছে, ওই এক্সটিংগুইশারটি ছিল অনেক পুরনো। নাইট্রোজেন ভরার সময় অতিরিক্ত চাপ তৈরি হওয়াতেই তা ফেটে গিয়েছে। বিস্ফোরণের জেরে দেবরাজের হাত ও পেটে গুরুতর আঘাত লেগেছে। স্থানীয়রা দাবি করছে, বহুদিন ধরেই ওই বাড়ির ভেতরে বিপদজনক এক্সটিংগুইশার রিফলিং-এর কাজ চলছিল। বহুবার সতর্ক করার পরেও বাড়ির মালিক কোনোরকম ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে পাড়ায় আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, বিস্ফোরণের তীব্র ধোঁয়ায় আশেপাশের বাড়ির কাঁচের জানলাও ভেঙে গিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে রাস্তায় ছোটাছুটি শুরু করেন। এমনকি হঠাৎ শব্দ ও ধোঁয়ায় কয়েক মুহূর্তের মধ্যে কেউ বুঝতেই পারেনি যে আসলে কোথায় কী ঘটেছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আমাদের বাড়ির জানালার কাঁচ একেবারে ঝনঝন করে ভেঙে পড়ল। আর এত জোরে শব্দ হল, যেন মনে হচ্ছিল আশেপাশে কোথাও ভূমিকম্প হচ্ছে। পরে দেখি একজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন
এলাকাবাসী এই ঘটনার পর প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। আবাসিক এলাকায় কীভাবে এরকম বিপদজনক কাজের অনুমতি দেওয়া হয়, সে নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তারা বলছে, প্রশাসনের নজরদারি কোথায়? কেন আগে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?
আরও পড়ুনঃ আলিপুর আদালত থেকে জামিন পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়! পুজোর আগে জেলমুক্তি?
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে এবং বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য নজরদারি চালানো হবে।