সহেলি মিত্র, কলকাতা: প্রতি রবিবার হলেই বন্ধ থাকছে বিদ্যাসাগর সেতু (Vidyasagar Setu)। এদিকে প্রতি রবিবার এরকম ঘটনার জেরে মহাবিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। বিগত কয়েক মাসে প্রতি রবিবার প্রশাসনের তরফে দ্বিতীয় হুগলী সেতু বন্ধ রাখার জেরে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। আজ রবিবার যেমন এই সেতু বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। মূলত ব্রিজের কিছু কেবল প্রতিস্থাপন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বারে বারে এই কাজ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তবে সাধারণ মানুষের যে হয়রানি হচ্ছে সেই দায় কে নেবে? উঠছে প্রশ্ন।
দ্বিতীয় হুগলি সেতু বন্ধ থাকায় বাড়ছে ক্ষোভ অনেকেই
হয়তো জানেন না যে এই সেতু সংস্কারের কাজ বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। ২০২৩ সালের শেষে শুরু হয়েছিল প্রাথমিক কাজ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে তা গতি পায়। প্রথমে বলা হয়েছিল ৬ মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। কিন্তু বছর ঘুরলেও খুব ধীর গতিতে কাজ চলছে। এদিকে সেতু সংস্কার করার জন্য সেতু বন্ধ রাখা হচ্ছে বারবার। যে কারণে বিপত্তি বাড়ছে আমজনতার। একজন জানাচ্ছেন, “সবাই যে সরকারি চাকরি করেন, তা নয়, এছাড়া রবিবারেও বহু মানুষকে কাজের জন্য বের হতে হয়। অনেকবার কাজে বেরিয়ে সময়মতো পৌঁছতে পারিনি। পুরো দিনটাই নষ্ট হয়েছে।”
নিত্য যাত্রীদের দাবি, কাজ যতই প্রয়োজন হোক, দুটি লেন পুরোপুরি বন্ধ না করে অন্তত একটি লেন খোলা রাখলে সুবিধা হত। রবিবারের ব্যস্ততা কম ভাবা হলেও বাস্তবে বহু মানুষ কর্মস্থলে যান। এছাড়াও রয়েছে ব্যক্তিগত কাজ, বাজার, চিকিৎসার প্রয়োজন।
আজও বন্ধ দ্বিতীয় হুগলি সেতু
জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশ জরুরি মেরামত ও পুনর্বাসন কাজের জন্য সেতুটি সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করেছে। ইঞ্জিনিয়াররা স্টে এবং ডাউন কেবল প্রতিস্থাপন এবং আইকনিক কাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রবিবার সকাল ৬:০০ টা থেকে দুপুর ২:০০ টা পর্যন্ত এই বন্ধ থাকবে সেতুটি।
পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মার জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, এই কাজের মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর প্রয়োজনীয় মেরামত, যার মধ্যে রয়েছে কেবল প্রতিস্থাপন এবং বিয়ারিং রক্ষণাবেক্ষণ – নিরাপত্তার কারণে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ স্থগিত রাখার কাজ। অসুবিধা কমাতে রবিবার মেরামতের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে বিলম্ব এবং যানজট তার আগে থেকেই থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিকল্প পথ কী?
বিদ্যাসাগর সেতু বা এর র্যাম্পগুলিতে সকাল ৬:০০ টা থেকে দুপুর ২:০০ টা পর্যন্ত কোনও যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এর ফলে এজেসি বোস রোড থেকে সেতুর দিকে আসা পশ্চিমমুখী যানবাহনগুলিকে এইভাবে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। হেস্টিংস ক্রসিং থেকে কেপি রোড হয়ে সেতুর দিকে যাওয়া যানবাহনগুলিকেও ডাইভারট করা হবে। কোনা বা কেপি রোড থেকে পূর্বমুখী যানবাহনগুলিকে ময়দান, সেন্ট জর্জ গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড এবং অন্যান্য বিকল্প করিডোর দিয়ে ডাইভারশনের সম্মুখীন হতে হবে। হাওড়া থেকে সেতুটি ধরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসা যানবাহনগুলিকে হেস্টিংস ক্রসিং এবং পার্শ্ববর্তী রাস্তাগুলির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। জেমস লং সরণি, এনএইচ-১৬ এবং কেআর রোড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে ডাইভারশন থাকবে।