বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: নির্বাচন পরবর্তী বিক্ষোভে উত্তাল তানজানিয়া। জানা যায়, নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হয়েছিল দেশটিতে (Major Protest In Tanzania)। সেই আন্দোলন দমনে ময়দানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। আর তাতেই মাত্র 3 দিনে 700 জনের মৃত্যু হয়েছে বলেই, দাবি করেছে তানজানিয়ার প্রধান বিরোধী দল।
এএফপির রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার নির্বাচনের পর এক টানা 3 দিন ধরে চলে বিক্ষোভ। আর সেই বিক্ষোভ আটকাতে এলে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে প্রবল সংঘর্ষে 500 থেকে 700 জনের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়াও গোটা দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট। যার জেরে হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি। এদিকে আন্দোলনকারীদের মৃত্যুর দায় শাসক শিবিরের উপর চাপিয়েছে প্রধান বিরোধীদল Chadema।
এই কারণেই রাস্তায় নেমেছিলেন বিক্ষোভকারীরা
তানজানিয়ার প্রধান বিরোধী গোষ্ঠী একেবারে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ‘দেশটিতে নির্বাচনের সময় ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে শাসক শিবিরের তরফে। আর তার প্রতিবাদেই রাস্তায় নেমেছিলেন দেশের সাধারণ মানুষজন। বুধবার থেকে শুরু হয় সেই বিক্ষোভ।’ বল বাহুল্য, সম্প্রতি তানজানিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের দল সিসিএম। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচনের সময় একেবারে একচেটিয়া রিগিং করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানীয় সূত্র বলছে, কারচুপি না করলে জিততে পারত না প্রেসিডেন্টের দল।
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির ঘটনাকে সামনে রেখে পথে নামেন দেশটির সাধারণ জনতা। তানজানিয়ার রাজধানী দার এস সালাম সহ একাধিক শহরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধীরা। এরপরই বিক্ষোভকারীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাদে পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষীদের। পরিস্থিতি ক্রমশ হিংসাত্মক হয়ে উঠলে তড়িঘড়ি গোটা দেশজুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গতকালও দেশটির ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল। এদিকে গোটা ঘটনায় টু শব্দ করেনি দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার।
অবশ্যই পড়ুন: ৪ নভেম্বর থেকে বাড়ি যাবে BLO-রা! দেখুন এনুমারেশন ফর্ম কেমন হবে আর কীভাবে ভরবেন
উল্লেখ্য, অনেকেই হয়তো জানেন, পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার জনসংখ্যা কম বেশি সাড়ে 7 কোটি। তবে এই জনসংখ্যার মধ্যে অন্তত 60 হাজার মানুষ ভারতীয় বংশদ্ভুত। বলাই বাহুল্য, সাম্প্রতিক দশকে ভারত থেকে অন্তত 20 হাজার মানুষ এই মুহূর্তে বিক্ষোভে উত্তাল দেশটিতে মূলত রোজগার এবং ব্যবসার সুবাদে পৌঁছে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। বেশ কয়েকটি সূত্রের খবর, আন্দোলনকারী বনাম নিরাপত্তা রক্ষীদের দ্বিপাক্ষিক সংঘর্ষে উত্তাল দেশটিতে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরাও।