রাজ্যের অফিসার আর নয়, নির্বাচনের আগেই ভোটার কার্ড নিয়ে বড় বদল নির্বাচন কমিশনের

Voter ID Card

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন শুরু হতে আর খুব বেশি দেরি নেই। হাতে বাকি আর মাত্র কয়েক মাস, তাই এই কয়েক মাসকে যেমন ভোট প্রচারে জোর মনোযোগ দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি, ঠিক তেমনই ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো ভোটারের অস্তিত্ব পুরোপুরি মুছে ফেলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে নির্বাচন কমিশন। আর এই পরিস্থিতিতে ভোটার কার্ড বিলিতে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। এখন থেকে সচিত্র পরিচয়পত্র বিলি বা সরবরাহে সরাসরি নজরদারি করবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর বা CEO।

ভোটার কার্ড বিলির ক্ষেত্রে নয়া পন্থা

আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে ভোটার কার্ড বিলির ক্ষেত্রে আগে বুথ লেভেল অফিসার বা BLO, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ERO হয়ে EPIC যেত জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে। সেখান থেকে CEO দফতর হয়ে মুদ্রণের জন্য পাঠানো হত। এরপর সেই এপিক আবার উল্টো ERO-দের কাছে। তারপর পাঠানো হত ডাক বিভাগে। তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই সচিত্র পরিচয়পত্র পৌঁছে দিত। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করত জেলা নির্বাচনী আধিকারিকরা। তবে এবার সেই দায়িত্ব খোদ পালন করবে CEO দফতর। নতুন পদ্ধতিতে প্রথমে মুদ্রণের জন্য পাঠানো হবে সরস্বতী প্রেসে। তারা মুদ্রিত কার্ড পাঠাবে GPO তে। সেখান থেকে ডাকে ভোটারদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে এই EPIC।

কী কারণে এই নয়া সিদ্ধান্ত?

CEO দফতরের নির্দেশ অনুসারে, রাজ্যের সব জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের ১৫ দিনের মধ্যে তাদের দফতরে জমা হয়ে থাকা সমস্ত ভোটার কার্ড গ্রাহকদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। আর এই কাজের শেষ সময়সীমা আগামী ২০ আগস্ট। যদি এর মধ্যে এই কাজ শেষ না হয় তাহলে পড়ে থাকা বাকি EPIC জমা দিতে হবে CEO দফতরে। তখন সেগুলি বিলির দায়িত্ব নেবে সিইও দফতরই। এই পদক্ষেপে প্রশাসনিকভাবে দ্রুত এবং কার্যকর পরিষেবা দেওয়ার দিশা খোঁজা হচ্ছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক CEO দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আগে ভোটার কার্ড তৈরি হয়ে একাধিক দফতর ঘুরে তবেই ভোটারের কাছে যেত। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় ভোটাররা বেশ হতাশ হচ্ছিলেন। তাই সেই হতাশা দূর করতে এই পদ্ধতি।

ডিজিটাল ব্যবস্থা চালুর দিকে নজর

ভোটার কার্ড বিলির এই নয়া পদ্ধতিতে CEO দফতরের একাংশ মনে করছে, নতুন এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোটাররা অনেক সহজে এবং দ্রুত তাদের সচিত্র পরিচয়পত্র হাতে পাবেন। এছাড়া, এই পুরো পদ্ধতিকে ডিজিটাল নজরদারির আওতায় আনা হবে যাতে প্রতিটি ভোটার কার্ডের গন্তব্য এবং ডেলিভারি অবস্থান ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। সেক্ষেত্রে আর আগের মতো বারবার অফিসে গিয়ে খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এইমুহুর্তে নির্বাচন কমিশনের একটাই লক্ষ্য, ভোটার কার্ড বিলিতে যাতে কোনও দেরি বা জটিলতা তৈরি না হয়, সেটা নজরে রাখা।

আরও পড়ুন: মরে ভূত, কিন্তু অ্যাকাউন্টে ঢুকছে পেনশনের টাকা! সরকারি প্রকল্পে কোটি কোটি নয়ছয়

প্রসঙ্গত, চলতি বছর, গত ২২ জুলাই, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের সিইও দফতরকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। যেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল যে, CEO দফতরকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে, যাতে তারা আরও দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে EPIC বিলি করার ক্ষেত্রে CEO যে সরাসরি তদারকি শুরু করতে চলেছে, সেটি যে একপ্রকার স্বাধীনভাবে কাজ করার একটা অংশ তা বলাই বাহুল্য।

Leave a Comment