সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে আবারও ফিরতে চলেছে চিটফান্ড সিন্ডিকেট (Chit Fund in West Bengal)। শুরু হচ্ছে ফের নতুন চক্রান্ত। এমনটাই দাবি করলেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারী। তিনি জানিয়েছেন, ২০০৭-০৮ সালে বাম আমলের শেষ দিকে পশ্চিমবঙ্গে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। I-Core এর মতো চিটফান্ডগুলি শুধুমাত্র সাধারণ মানুষকে ঠকায়নি, বরং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে পুরস্কারও দিয়েছিল। বামফ্রন্ট জামানায় বহু চিটফান্ড সংস্থা সাধারণ মানুষের থেকে সর্বস্ব আত্মসাৎ করেছিল।
আর সেই চিটফান্ড আবারও ফিরতে চলেছে।
গতকাল তিনি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ২০১১ সালের তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর চিটফান্ড কেলেঙ্কারি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। মুহূর্তের মধ্যে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। যার মধ্যে সারদা, রোজভ্যালি, গ্রীন রেজ প্রাইভেট, টাওয়ার গ্রুপের মধ্যে বড় বড় চিটফান্ডের বিজ্ঞাপনে ছিল তৃণমূল নেতাদের মুখ। তবে চিন্তার বিষয়, ২০২৫ সালে সেই পুরনো চক্র আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। আর তাতে যুক্ত রয়েছে তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাই।
ফের রাজ্যে ফিরতে চলেছে চিটফান্ড!
তরুণজ্যোতি দাবি করছেন, ২০২৫ সালে পুরনো কেলেঙ্কারি আবারও মাথা তুলতে শুরু করেছে। এবার ২০২৫ সালে নিবন্ধিত হয়েছে চারটি কোম্পানি। সেগুলি হল SUIM E-Commerce Business Pvt Ltd, SUIM Production Industries Pvt Ltd, SUIM, Services Industries Pvt Ltd এবং SUIM Entertainment Pvt Ltd। সবথেকে বড় ব্যাপার, আগের ধাঁচেই তারা কাজ শুরু করেছে। প্রথমত, রাজ্যের সমস্ত প্রান্তে হাজার হাজার এজেন্ট নিয়োগ করছে। তাদের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অস্বাভাবিক টাকা তুলছে। দ্বিতীয়ত, অবৈধি আর্থিক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, আর রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নেটওয়ার্ক তৈরি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করছে।
পশ্চিমবঙ্গে আবার ফিরে আসছে চিটফান্ড সিন্ডিকেট — শুরু হয়েছে নতুন চক্রান্ত
২০০৭–০৮ সালে বাম আমলের শেষ দিকে পশ্চিমবঙ্গ দেখেছিল একদল স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। I-Core–এর মতো বিশাল চিটফান্ড শুধুমাত্র সাধারণ মানুষকে ঠকায়নি, সেই সংস্থাই তখনকার মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে পুরস্কার… pic.twitter.com/RBpTDovjUo
— Tarunjyoti Tewari (@tjt4002) December 6, 2025
সবথেকে বড় ব্যাপার, এই সংস্থাগুলির বৈঠক হচ্ছে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২০১১-১৬ সালের মধ্যে। আর তদন্তে উঠে আসা অডিও রেকর্ডিং-এ তৃণমূল নেতাদের নাম রয়েছে। এমনকি বেশ কিছু জায়গায় নেতারা মঞ্চে উপস্থিত থেকেই কোম্পানিগুলির সভাপতিত্ব করছেন। পাশাপাশি মলয় ঘটক সহ একাধিক জেলাস্তরের তৃণমূল নেতারাও এতে যুক্ত হয়েছে। আর কিছু কিছু অডিওতে অভিষেক ব্যানার্জীর নামও পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এই নেটওয়ার্ক এখন গোটা পশ্চিমবঙ্গে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র এজেন্ট ছড়িয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।