প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই ভোটপ্রচারের প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। এমতাবস্থায় গত ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্যে SIR লাগু হয়েছে৷ অর্থাৎ বিভিন্ন জেলায় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ চলছে৷ একাধিক বিতর্কের উদ্ভব হয়েছে এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। এরই মাঝে আধার কার্ড নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা UIDAI৷ পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩৪ লক্ষ আধার কার্ডধারীকে ‘মৃত’ বলে শনাক্ত করেছে এই সংস্থা।
৩৪ লক্ষ আধার কার্ডধারীকে ‘মৃত’!
রিপোর্ট মোতাবেক গতকাল অর্থাৎ বুধবার ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR)-এর মধ্যেই ইউআইডিএআই (UIDAI) কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়ালের মধ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই নির্বাচন কমিশনকে আধার কর্তৃপক্ষ UIDAI জানিয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে আধার কার্ড চালু হওয়ার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩৪ লক্ষ আধার কার্ডধারীকে ‘মৃত’ বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মতে, রাজ্যে প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষের আধার কার্ড ছিল না। যদিও তারা বর্তমানে সকলেই মৃত। আর এই তথ্য শোনার পরেই ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের চলার মধ্যেই কমিশন সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দিলেন।
রাজ্যের সিইওদের বড় নির্দেশ কমিশনের
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “ SIR শুরু হতেই ইতিমধ্যে কমিশন ভুয়ো ভোটার, মৃত ভোটার, অনুপস্থিত ভোটার এবং ভোটার তালিকায় ডুপ্লিকেট নাম সম্পর্কিত অসংখ্য অভিযোগ পেয়েছে। সেক্ষেত্রে মৃত নাগরিকদের জন্য UIDAI তথ্য আমাদের ভোটার তালিকা থেকে নাম নথিভুক্ত, শনাক্ত এবং বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে৷” অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, মূলত ভোটারদের তথ্যযাচাই এবং অসঙ্গতি দ্রুত শনাক্ত করার জন্য রাজ্যের সিইওদের আধার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন: পার্থর সাসপেনশন কি তুলে নেবে তৃণমূল? কালীঘাট থেকে এল স্পষ্ট বার্তা
প্রসঙ্গত, এইমুহুর্তে মৃত এবং ভুয়ো ভোটার নির্মূল করার জন্য SIR প্রক্রিয়া প্রতিটি এলাকায় সাড়া ফেলেছে। বুথ লেভেল অফিসাররা ঘরে ঘরে যাচাইকরণের কাজ পরিচালনা করেছেন৷ তার জন্য তাঁদের নানা বাঁধার মুখে পড়তে হচ্ছে। জানা গিয়েছে গত বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের ভোটার তালিকার উপর ভিত্তি করে গণনা ফর্ম বিতরণ করা হচ্ছে এবং ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে আবেদনকারীদের তরফে দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। শেষ আপডেট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত আটটা পর্যন্ত রাজ্যে ৬.৯৮ কোটিরও বেশি ফর্ম এখনও পর্যন্ত বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে।