প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত শনিবার লিওনেল মেসির ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর ২০২৫’-কে কেন্দ্র করে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (Messi Event In Kolkata) সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা নিয়ে এখনও তরজা চলছে জোর কদমে। মাত্র প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যেই স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান আর্জেন্টাইন ফুটবল মহাতারকা। হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও কেউ মেসিকে দেখতে পারেনি। এদিকে মেসির আকস্মিক প্রস্থানের পর ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন, শুরু হয় ভাঙচুর ও বিক্ষোভ। বিপুল নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যার ফলে অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ সকলে। নেতা মন্ত্রীদের উপরেও বেশ রাগ সকলের। এবার এই নিয়ে মামলা উঠল কলকাতা হাইকোর্টে।
জনস্বার্থ মামলা দায়ের হাইকোর্টে
শনিবার, যুবভারতীতে লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে বিশৃঙ্খলা নিয়ে ব্যথিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য তিনি কমিটি গড়েছেন তিনি। তদন্তে নেতৃত্বে দেবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়। এ ছাড়াও, কমিটিতে আছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীরা। এবার সেই তদন্ত কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ অর্থাৎ সোমবার জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করল কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ, রাজ্যের গড়া কমিটির তদন্ত করার ক্ষমতাই নেই। তাই সঠিক তদন্তের জন্য পৃথক কমিটি প্রয়োজন। আশা করা যাচ্ছে চলতি সপ্তাহেই এই মামলা দু’টির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
পৃথক তদন্ত কমিটির দাবি
শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি যুবভারতী কাণ্ডে রাজ্য সরকারের নির্মিত কমিটির ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি পৃথক ভাবে আকর্ষণ করেছেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ও। উভয়েরই বক্তব্য, রাজ্যের গঠিত কমিটি সঠিক তদন্ত করতে পারবে না। তাই পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করুক আদালত। উভয় মামলার অনুমতি দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। শনিবার এই ঘটনা ঘটার পর যখন মুখ্যমন্ত্রী তদন্ত কমিটির নির্দেশ দিয়েছিলেন তখনই সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন এই তদন্ত নিরপেক্ষ হবে না। তাঁর মতে “পাড়ার লোককে রেখে তদন্ত কমিটি নয়, বর্তমান বিচারপতিকে রেখে নিরপেক্ষ তদন্ত করা উচিত।”
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের আদ্রা ও খড়গপুর ডিভিশনে বাতিল একগাদা ট্রেন, তালিকা দিল দক্ষিণ পূর্ব রেল
ইতিমধ্যেই যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন যে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল, সেই ঘটনায় ২ জনকে আজ গ্রেপ্তার করল বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম শুভ্রপ্রতিম দে ও গৌরব বসু। সোমবার ধৃত দু’জনকে বিধাননগর মহকুমা আদালতে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানাতে পারে পুলিশ। উল্লেখ্য, যুবভারতীর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে। অন্যদিকে দর্শকদের টাকা ফেরত দিতেও উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি অনুষ্ঠান আয়োজক শতদ্রু দত্তকে SFIO এর আওতায় এনে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন আইনজীবী।