রাতে লোকো পাইলটদের মধ্যে কী কথা হয়? জানেন না ৯৯.৯৯% মানুষ

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: রাতের নিস্তব্ধতার মধ্যে দিয়ে রেলপথের বুক চিড়ে কু… ঝিক ঝিক শব্দে ছুটে চলে ট্রেন। মাঝ রাত, তাই যাত্রীরা তখন নিশ্চিন্ত নিদ্রায় আচ্ছন্ন। ঠিক সেই সময়ে লোকো পাইলটের কেবিনে চলে নানান কথোপকথন। না, তা অবশ্য শুনতে পাওয়া যায় না যাত্রীদের বার্থ থেকে!

তবে হ্যাঁ! রাতের নিস্তব্ধতা, মাঝে স্টেশনে চায়ে চায়ে শব্দের মধ্যেও চালকের কেবিনে পাইলট এবং কো পাইলট দুজনেই একে অপরের সাথে সারারাত কথা বলতে বলতেই সময় কাটিয়ে দেন! কিন্তু কেন? কী এমন আলোচনা হয় চালক এবং সহকারী চালকের মধ্যে?

লোকো পাইলট এবং সহকারী পাইলটের মধ্যে কী এমন কথা হয়?

প্রথমেই জানিয়ে রাখি, সারারাত ট্রেন চলাকালীন কেবিনে লোকো পাইলট এবং সহকারী পাইলট দুজনেই একে অপরের সাথে নানান বিষয়ে কথা বলেই সময় কাটিয়ে দেন। বলা বাহুল্য, এই কথোপকথন কিন্তু একেবারেই গাল গল্প নয় বরং নিজেদের কাজের প্রয়োজনেই এই কথোপকথন চলে পাইলট এবং সহকারী পাইলটের মধ্যে। কিন্তু কী কথা হয় দুজনের?

অবশ্যই পড়ুন: লাগবে না ডেবিট কার্ড! স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়েই ATM থেকে তুলতে পারবেন টাকা

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই রেল বোর্ডের প্রাক্তন মেম্বার প্রদীপ কুমার জানিয়েছেন, রেললাইনে সিগন্যালগুলি মূলত 1 থেকে 2 কিলোমিটার অন্তর অন্তর বসানো হয়। তবে এমন বেশ কিছু স্পর্শকাতর জায়গাও রয়েছে যেখানে মাত্র 500 মিটারের মধ্যেই রয়েছে একটি করে সিগন্যাল। প্রদীপ বাবু বলেন, সাধারণত স্টেশন বা জংশনের কাছে যেখানে ট্রেনের গতি কমে যায়, মূলত সেই সব জায়গায় 200 থেকে 500 মিটারের মধ্যে রাখা হয় সিগন্যাল।

এরপরই প্রদীপ বাবু জানান, প্রতিটি সিগন্যালের একটি করে নম্বর থাকে। ট্রেন চলাকালীন যখন সিগন্যাল অতিক্রম করা হয় ঠিক সেই সময় লোকো পাইলট উঁচু স্বরে ওই নম্বরটি বলে ওঠেন। সেই সাথেই বলে দেন ওই সিগন্যালের রঙও। এরপরই তা শোনা মাত্রই কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সহকারী পাইলটও নম্বরসহ ওই সিগন্যালের রঙ উচ্চারণ করে পাইলটকে বুঝিয়ে দেন যে তিনি যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক, এবং তিনি বুঝতে পেরেছেন। মূলত এভাবেই, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং ডিউটি হিসেবে সারারাত ট্রেন চলাকালীন এমনই বিভিন্ন রূট, সিগন্যাল ও ট্রেন লাইন প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতেই সময় কাটিয়ে দেন পাইলট ও সহকারী পাইলট। বলে রাখি, আসলে এই কাজ তাঁদের ডিউটির মধ্যেই পড়ে।

Leave a Comment