বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ‘পাকিস্তান রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী অংশীদার’। কথাটা বলেছেন, খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। যা প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠছে, ক্রমাগত পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনীতিতে আমেরিকার মতো এবার কি রাশিয়াও ভারতের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে?
রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় পাকিস্তান
সম্প্রতি চিনের সাংহাই সহযোগিতা পরিষদের শীর্ষ সম্মেলন শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চিন ছাড়ার পরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সাথে একটি বৈঠক সারেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। ওই বৈঠকেই, শরীফ পুতিনকে স্পষ্ট জানান ভারত এবং রাশিয়ার সম্পর্ককে সম্মান জানায় পাকিস্তান। তবে আমাদেরও আশা পাকিস্তান এবং রাশিয়ার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। আমরা চাই, রাশিয়ার সাথে আরও গভীর সম্পর্ক স্থাপন করতে। পাক প্রধানমন্ত্রীর এমন প্রস্তাবে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়েছিলেন রুশ শাসক।
বিবিসির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো তানভী মদন শেহবাজ এবং পুতিনের কথোপকথনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন নির্দিষ্ট কোনও দেশের সাথে আবদ্ধ নন। পাক প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে তিনি নাকি বলেছিলেন, রাশিয়া পাকিস্তানের সাথে আরও ভাল সম্পর্ক আশা করে।
পাকিস্তানকে ঐতিহ্যবাহী অংশীদার বললেন পুতিন
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ওআরএফ-এর ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ আলেক্সি জাখারভ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, মোদি চিন ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শরীফ দ্বিপাক্ষিক এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেখানেই নাকি মোদির প্রিয় বন্ধু পুতিন পাকিস্তানকে একটি ঐতিহ্যবাহী অংশীদার হিসেবে দাবি করেন। শুধু তাই নয়, ওই বৈঠকেই পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্য বাড়ানোর কথাও পাড়েন তিনি। বেশ কিছু রিপোর্ট দাবি করছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সহযোগিতা চেয়ে শাহবাজ শরীফকে রাশিয়ায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভ্লাদিমির। আর এখানেই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, তাহলে কি নয়া দিল্লিকে টপকে ইসলামাবাদের সাথে সখ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে মস্কো?
অবশ্যই পড়ুন: অবসর ভেঙে ফের ২২ গজে রস টেলর, তবে নিউজিল্যান্ড নয়! খেলবেন অন্য দেশের হয়ে
বড়সড় হুমকির মুখে পড়তে পারে ভারত?
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাক প্রধানমন্ত্রীর সাথে পুতিনের এমন ঘনিষ্ঠতা ভারতের মাথাব্যথা বাড়াতে পারে। আসলে, চিন, রাশিয়া এবং পাকিস্তান যদি একত্রিত হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ব্যাকফুটে চলে আসতে পারে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভারত! সম্প্রতি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কার্নেগি এন্ডোমেন্টের সিনিয়র ফেলো অ্যাশলে জে টেলিস দাবি করেছেন, ভারত সম্পূর্ণরূপে আমেরিকান শিবিরে যেতে পারবে না। এদিকে চিন, রাশিয়া এবং পাকিস্তান যদি এক হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ভারতের জন্য তা যথেষ্ট দুঃখের হবে! যদিও কূটনীতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছেন, আর যাই হোক, নয়া দিল্লির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না মস্কো।