রাশিয়ার পাশে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ভারত! তেল, গ্যাস কেনায় NATO-র নিষেধাজ্ঞা ওড়াল দিল্লি

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বিগত দিনগুলিতে আমেরিকা সহ NATO দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে বন্ধু রাশিয়া থেকে ব্যারেল ব্যারেল তেল আমদানি করেছে ভারত। আর সে কারণেই দিল্লির ওপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ পশ্চিমী দুনিয়া! সরাসরি মুখে না বললেও নরমে গরমে বেশ কয়েকবার ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করার বিষয়ে বুঝিয়েছিল আমেরিকা। বলা চলে, কার্যত নিষেধই করেছিলেন ট্রাম্প!

তবে সেই সব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বন্ধু রাশিয়ার সাথে সখ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রমশ বাণিজ্য বেড়েছে দু দেশের। সম্প্রতি সে কথাই আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল দিল্লি। NATO মহাসচিব মার্ক রুট রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানিতে 100 শতাংশ সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরও কেন ভারত সেসব বারণ শুনছে না তা বুঝিয়ে দিলেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

দেশের শক্তি সরবরাহ সবার আগে

NATO মহাসচিবের কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানোর বদলে অনেকটাই বাড়িয়েছে। মূলত সেসব ঘটনাকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লির একটি সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমাদের কাছে প্রাথমিক অগ্রাধিকার দেশের শক্তি চাহিদা পূরণ। শক্তি সরবরাহের প্রশ্নে কোনও রকম আপোস নয়।

বর্তমান পরিস্থিতি যা তাতে বৈশ্বিক ভূ রাজনীতিক পরিবেশ আমাদের সিদ্ধান্তের প্রভাব ফেলেছে। এদিন ঠিক এমন ভাষাতেই কথা বলতে বলতে আচমকা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, আমরা গোটা বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তবে পশ্চিমী দেশগুলিকেও এমন দ্বিচারিতার বিষয়ে সতর্ক করছি। সব মিলিয়ে, এদিন NATO মহাসচিব রুটের নিষেধাজ্ঞা হুঁশিয়ারির পরই একেবারে দেশের স্বার্থে সপাটে জবাব দিয়েছিলেন জয়সওয়াল।

ভারত, চিন ও ব্রাজিলকে কড়া হুঁশিয়ার NATO-র

দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের পাশাপাশি চিন এবং ব্রাজিলকে রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস আমদানির বিষয় সতর্ক হওয়ার জন্য বলছে পশ্চিমি দুনিয়া। আসলে NATO-র মূল উদ্দেশ্য, ভারত সহ এই দুই দেশ যেন রাশিয়া থেকে কোনও রকম আমদানি না করে। মূলত মস্কোকে টাইট দিতেই এমন ভাবনা পশ্চিমীদের।

মূলত সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সম্প্রতি NATO মহাসচিব রুট কড়া ভাষায় বলেন, ভারত, চিন এবং ব্রাজিল আগামী দিনে রাশিয়ার সাথে লেনদেন চালিয়ে গেলে গুরুতর অর্থনৈতিক শাস্তির মুখে পড়বে। এদিন রুটের বক্তব্য ছিল, রাশিয়ার শাসক যদি শান্তি আলোচনাকে গুরুত্ব সহকারে না নেন এবং ভারত, চিন ও ব্রাজিল যদি এখনও রাশিয়ার সাথে লেনদেন চালিয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রে আগামী দিনে এই দেশগুলির ওপর 100 শতাংশ সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে।

 

অবশ্যই পড়ুন: চতুর্থ টেস্টের আগেই ইংল্যান্ডকে শাস্তি দিল ICC, তবে বাঁচল ভারত! কীভাবে?

রাশিয়াকে নিয়ে ভারত সহ দুই দেশকে এমন হুঁশিয়ারির পাশাপাশি NATO মহাসচিব এ কথাও বলেন, পুতিনকে ফোন করে বলুন যেন শান্তির পথে ফিরে আসে। অন্যথায় এর প্রভাব পড়বে ভারত, চিন ও ব্রাজিলের ওপর। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাশিয়া যদি আগামী দিনে শান্তির পথে ফিরে না আসে তবে এর প্রভাব পড়বে মস্কোর সাথে বাণিজ্যে যুক্ত দেশগুলির ওপর। তাদের ঘাড়ে 100 শতাংশ সেকেন্ডারি ট্যারিফ চাপানো হবে। যদিও সেই দাবিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাশিয়ার সাথে ক্রমশ বাণিজ্য বাড়াচ্ছে ভারত।

Leave a Comment