‘রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার কোনও তথ্য নেই’, ট্রাম্পের দাবির মাঝে জানাল ভারত

Donald Trump

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ পড়ছে বিশ্বের তেলের বাজারে। আর এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) এক বক্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে শোরগোল। ট্রাম্প দাবি করছে, ভারত নাকি আর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনবে না! তবে আদৌ কি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত? এই বক্তব্যের নেপথ্যে যুক্তি কী রয়েছে?

ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য

শনিবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেছেন, আমার জানা মতে ভারত আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। আমি শুনেছি এমনটাই হয়েছে। তবে সত্যি কিনা জানি না। তবে এটা একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। এখন দেখার, পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়। আর এই মন্তব্য সামনে আসতেই আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। কারণ এর আগেও ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উপর রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। 

তবে এ প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের প্রাপ্যতা এবং তৎকালীন বৈশ্বিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে সব সিদ্ধান্ত নিই। তাই আপনার প্রশ্নের উত্তর হিসেবে আমি বলতে পারি যে, এ বিষয়ে এখনো কোনোরকম তথ্য আমার কাছে নেই।

বিশ্বের তেলের যোগানদাতা রাশিয়া

উল্লেখ্য জানিয়ে রাখি, রাশিয়া হল বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল উৎপাদক দেশ। প্রতিদিন প্রায় 9.5 মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করে রাশিয়া, যা বিশ্বের মোট চাহিদার প্রায় 10 শতাংশ। পাশাপাশি তারা প্রতিদিন প্রায় 4.5 মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল এবং 2.3 মিলিয়ন ব্যারেল পরিশোধিত পণ্য রপ্তানি করে।

2022 সালে যুদ্ধ শুরুর পর অনেকে মনে করছিল যে, রাশিয়ার তেল বিশ্ব বাজার থেকে বাদ পড়বে। আর এর ফলে দাম আকাশছোঁয়া হবে। তবে বাস্তবে 2025-এর মার্চ মাসে অপরিশোধিত তেলের দাম পৌঁছয় প্রতি ব্যারেল 167 ডলার। আর এই সময় ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কিনে আন্তর্জাতিক দাম নিয়ন্ত্রণ করতেও ভূমিকা নিয়েছিল।

তবে সরকারি সূত্রের এক তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া কোনোদিন তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বরং G7 এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিলে একটি মূল্য বেঁধে দিয়েছিল, যাতে তারা বড় অংকের মুনাফা উপার্জন না করতে পারে এবং বিশ্বজুড়ে তেলের যোগান যেন অব্যাহত থাকে। এদিকে ভারত বরাবরই আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে রাশিয়ার থেকে ডিসকাউন্টে তেল কিনেছে।

আরও পড়ুনঃ ৮৫০ টাকা দাম কমল সোনার, ১৭৫০ টাকা পড়ল রুপোর দর! আজকের রেট

উল্লেখ্য, রাশিয়ার তরফ থেকে রপ্তানিকৃত LNG-এর সবথেকে বড় ক্রেতা ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যারা 51% আমদানি করেছিল। ওদিকে চিন করেছিল 21% এবং জাপান 18%। এমনকি পাইপলাইন গ্যাসের ক্ষেত্রেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের 37%, চিন 30% এবং তুরস্ক 27% আমদানি করত। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, শুধু ভারত নয়, বরং রাশিয়ার শক্তি যোগাতে বহু উন্নত দেশও সাহায্য করছে।

Leave a Comment