বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: দিন আনা দিন খাওয়া সবজি বিক্রেতা এবার মোটা অঙ্কের GST নোটিস পেলেন। না, এ একেবারেই হাজার, দু হাজারের ঘটনা নয়! সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, কর্নাটকের হাভেরির এক সবজি বিক্রেতা এবার 29 লক্ষ টাকার GST নোটিস পেয়েছেন। যে খবর প্রকাশ্যে আসতেই, কার্যত কপালে হাত পড়ে গিয়েছে অনেকেরই!
চার বছরে 1.63 কোটি টাকার লেনদেন করেছেন সবজি বিক্রেতা!
রিপোর্ট অনুযায়ী, কর্নাটকের হাভেরির এক মাঠের পাশেই একটি ছোট্ট দোকানে সবজি নিয়ে বসেন শঙ্করগৌড়া হাদিমানি। সাম্প্রতিক সময়ে কর্নাটকের বেশিরভাগ মানুষ অনলাইন লেনদেন করতে বেশি পছন্দ করেন, মূলত সেই কারণেই তাঁর বেশিরভাগ ক্রেতাই নোটের বদলে অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে সবজি কিনে নিয়ে যান।
এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তবে সম্প্রতি GST কর্তৃপক্ষের তরফে একটি নোটিস পান শঙ্করগৌড়া। যেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, গত 4 বছরে সবজি বিক্রি বাবদ মোট 1.63 কোটি টাকা লেনদেন করেছেন তিনি। আর সেই বিপুল লেনদেনের কারণেই GST বাবদ 29 লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে। তবে সেই GST আপাতত বকেয়া। তাই তা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে ওই সবজি বিক্রেতাকে।
29 লক্ষের GST নোটিস দেখে মাথায় হাত বিক্রেতার
সবজি বিক্রি করেও এত টাকার GST নোটিস পেলেন কীভাবে? কার্যত এমন প্রশ্নের উত্তরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ওই সবজি বিক্রেতা বলেন, তিনি সাধারণত চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি সবজি কিনে তাঁর হাভেরির ছোট্ট দোকানে বিক্রি করেন। তবে তাঁর কাছ থেকে যারা সবজি কিনে নিয়ে যান সেইসব ক্রেতারা মূলত অনলাইন লেনদেন অর্থাৎ UPI-এর মাধ্যমে পেমেন্ট করেন তাঁকে।
কর্ণাটকের ওই সবজি বিক্রেতার দাবি, প্রতিবছর সরকারি নিয়ম মেনে তিনি আয়কর সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দাখিল করেন। ওই ছোট্ট দোকান থেকে মোটামুটি রোজগার হয় তাঁর। তবে GST কর্তৃপক্ষের তরফে 29 লক্ষ টাকার নোটিস পেয়ে একপ্রকার মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে ওই সবজি বিক্রেতার। এই অর্থ কিছুতেই তাঁর পক্ষে মেটানো সম্ভব নয় বলেই জানান কর্ণাটকের বিক্রেতা শঙ্করগৌড়া।
অবশ্যই পড়ুন: জগদীপ ধনখড়ের জায়গায় কে? পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪ নামে গুঞ্জন
Considering the margin on vegetables after wastage is around 15% less which translates to ₹40.75 lakh/per year and the margin comes out to just over 6 lakh/year.
Dude is barely earning a middle class wage, stop this harassment. https://t.co/P1m43Ftk6V
— Changing India (@Changing_India_) July 22, 2025
প্রসঙ্গত, সাধারণত প্যাকেটজাত দ্রব্য ছাড়া খোলা আনাজ বা অন্যান্য দ্রব্যের ক্ষেত্রে GST লাগে না। অর্থাৎ একজন বিক্রেতা যদি চাষিদের থেকে সরাসরি সবজি কিনে খোলা বাজারে বিক্রি করেন অর্থাৎ প্যাকেটজাত না করেন তবে তার ওপর কোনও রকম GST বসবে না।
এদিকে সম্প্রতি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, কর্ণাটক জুড়ে যেসব বিক্রেতা বা ব্যবসায়ীরা অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে ব্যবসা করছেন তাদের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সীমার পর GST লাগু হবে। অনেকেই মনে করছেন, হয়তো কর্নাটকের GST দপ্তরের তরফে বেঁধে দেওয়া সেই সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল ওই বিক্রেতার লেনদেন। হয়তো সেই কারণেই অন্যান্য ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি তাঁর কাঁধেও লাগল GST-র ধাক্কা। কিন্তু তাই বলে 29 লক্ষ? সবজি ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে GST-র এই অঙ্ক মানতে পারছেন না অনেকেই!