সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপের পথে হাঁটলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করি। এবার জাতীয় মহাসড়কগুলিতে ভ্রমণকারীরা খুব সহজেই কিউআর কোড (QR Code on Highways) স্ক্যান করে জানতে পারবে যে রাস্তাটি কে তৈরি করেছে, কোন কন্ট্রাক্টার ছিল, কত টাকা ব্যয় হয়েছে ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য। এমনকি কোনও সমস্যা হলে ওই কিউআর কোড স্ক্যান করেই যোগাযোগের নম্বর পাওয়া যাবে। হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী।
কী বললেন তিনি?
গত 28 অক্টোবর নয়াদিল্লিতে ভারতীয় শিল্প কনফেডারেশনের এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গড়করি বলেছেন, সরকার মহাসড়কগুলোতে এবার কিউআর কোড সহ তথ্য বোর্ড স্থাপন করবে। শুধুমাত্র কোডটিকে স্ক্যান করলেই ভ্রমণকারীরা সেই ঠিকাদারের নাম, মোবাইল নম্বর, এমনকি জরুরী হেল্পলাইন নম্বর পেয়ে যাবে। এমনকি ওই রাস্তা সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ দেখতে পাবে। এর ফলে প্রতিটি হাইওয়ে প্রকল্পের জন্য কে দায়ী, তা মানুষ সহজে জানতে পারবে। পাশাপাশি এই পদক্ষেপ রাস্তার খারাপ অবস্থা মেরামত করার জন্যও ভূমিকা রাখবে।
Big Win!@nitin_gadkari ji is implementing my QR scan idea!
On July 12, I posted: If ₹5 biscuit has all details, why not 100 Cr road?
I demanded QR codes for roads. After months of efforts, it’s finally happening!
This is just the start of Accountability & Transparency! pic.twitter.com/aIBUV5GFx1
— Anuradha Tiwari (@talk2anuradha) October 28, 2025
গড়করি এদিন স্পষ্ট বলেছেন, সরকার চলমান মহাসড়ক প্রকল্পগুলির কর্মক্ষমতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনা করতে পারবে এবং নিম্নমানের কাজের জন্য দায়ী ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে। এমনকি তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রতিটি ঠিকাদার প্রকল্প শেষ হওয়ার পর 10 বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়বদ্ধতা পালন করবে। যদি কোনরওকম ত্রুটি থাকে, তাহলে সেই দায়ী কর্মকর্তা ও ঠিকাদারকে অবশ্যই তা ঠিক করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট।
কী কী তথ্য পাওয়া যাবে কোড স্ক্যান করলে?
সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর কথায়, এই কোড স্ক্যান করলে নিম্নলিখিত বিবরণগুলি দেখা যাবে—
- প্রকল্পের নাম এবং আইডি,
- ঠিকাদার এবং সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী,
- রাস্তাটি তৈরি করার জন্য মোট খরচ এবং সময়সীমা,
- তহবিল সংস্থা, সে কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন হতে পারে ,
- অগ্রগতি সম্পর্কিত তথ্য ও রক্ষণাবেক্ষণের ইতিহাস,
- জরুরী হেল্পলাইন নম্বর।
আরও পড়ুনঃ ফের কলকাতায় উদ্ধার টাকার পাহাড়, পুরনিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তারাতলায় বড় সফলতা ইডির
গড়করি এদিন আরও বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি কেন সবার অভিযোগের জবাব দিতে যাব। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই সমস্ত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা উচিত। আর যারা খারাপ কাজ করে তারা জনগণের কাছ থেকেই শাস্তি পাবে। সেজন্যই এই কিউআর কোডের ভাবনা মাথায় আনা। বলাবাহুল্য, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয় বর্তমানে হাইওয়ে নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই বছরে প্রায় 55 হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে যা আগামী দুই বছরের মধ্যে বেড়ে 1.4 লক্ষ কোটি টাকা পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার, এই কিউআর কোড প্রযুক্তি কবে নাগাদ মহাসড়কগুলিতে কার্যকর হয়।