রুট ভেঙে অন্য পথে যাওয়ার চেষ্টা! উজ্জয়িনীতে মহরমের শোভাযাত্রায় লাঠিচার্জ পুলিশের

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গতকাল মহরমের দিন ‍নিরাপত্তার পাশাপাশি শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থায় বিশেষ নজর দিয়েছিল লালবাজার। তার ফলে শহরের বেশ কিছু রাস্তায় সাময়িক ভাবে ট্র্যাফিকের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছিল। এ দিন বাড়তি নিরাপত্তার খাতিরে অতিরিক্ত দু’হাজার পুলিশকর্মী বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছিল। শুধু ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ নয় , শহরের নিরাপত্তার বিষয়টিতেও বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। আর এই আবহেই মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে মহরমের শোভাযাত্রায় ঘটল ভয়ংকর দুর্ঘটনা।

ঘটনাটি কী?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল উজ্জয়িনীর বেগমবাগ এলাকায় মহরম উৎসবকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল এক বিরাট উত্তেজনা। এদিন মহরমের নবম দিনের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার শোভাযাত্রা ছিল। শোভাযাত্রায় যাতে কোনো অসুবিধা না থাকে তার জন্য গত দশ দিনে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়। সেখানে রুট চূড়ান্ত করেছিল প্রশাসন। যাতে উৎসবের দিন কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে তৈরি না হয়। সকলেই তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন। কিন্তু সেই নিয়ম অমান্য করল শোভাযাত্রার আয়োজকরা।

ব্যারিকেড ভেঙে অন্য রুটে যাওয়ার চেষ্টা!

প্রাপ্ত রিপোর্ট মোতাবেক জানা গিয়েছিল যে, স্বাক্ষরিত সেই নিয়মাবলীতে বলা হয়েছিল যে খজুরওয়ালি মসজিদ থেকে নিকাস চৌরাহা পর্যন্ত যাবে মহরমের শোভাযাত্রা। কিন্তু এদিন একটি দল অনুমোদিত রুট উপেক্ষা করে শোভাযাত্রার পথ ঘোরানোর চেষ্টা করে। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।

অভিযোগ ওঠে যে শোভাযাত্রার আয়োজক তথা ইরফান খান ও তাঁর সহযোগীরা নির্ধারিত পথ ছেড়ে অবদালপুরার দিকে শোভাযাত্রা ঘোরানোর চেষ্টা করেন। তখনই পুলিশ বাধা দিলে তারা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে, এবং শুরু হয় মারামারি।

মামলা দায়ের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে!

জানা গিয়েছে এই ঘটনায় দুই পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন এবং ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) অনুযায়ী, ধারা ১৯১ (সরকারি কর্মচারীর কাজে বাধা), ধারা ১৯২ (আইনি নির্দেশ অমান্য), এবং ধারা ১৩২ -তে (জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই ঘটনায় গ্রেফতারের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তার জন্য ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বাকিদের শনাক্ত করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ২১ জুলাই আসতে চলেছে বিরাট চমক! দলবদল নিয়ে মুখ খুললেন খোদ দিলীপ ঘোষ

এদিকে এদিনের ঘটনার পর সীরত কমিটি নিজেদের দায়িত্ব স্বীকার করে নেয়। কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মকসুদ আলি বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসন পরিষ্কারভাবে রুট নির্ধারণ করেছিল। এমনকি লিখিত চুক্তিও হয়েছিল। কোনও পরিবর্তন হলে, তা আগেই বৈঠকে জানানো উচিত ছিল। নির্ধারিত পথ ভেঙে ফেলার কাজ সত্যিই উচিত হয়নি। তাই যারা এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

Leave a Comment