বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: একটা সময়ে কলকাতা ময়দানের দুই প্রধানের হয়ে মাঠে দাপিয়ে ফুটবল খেলেছিলেন তিনি। আজ সেই শোভন চক্রবর্তীর খবর কে রাখে? তিনি ছিলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। হয়ে উঠতে পারতেন ইস্টবেঙ্গলের স্বপ্ন পূরণের চাবিকাঠি। কিন্তু সবই থেমে গেল হঠাৎ। আজ বাংলার এই দাপুটে ফুটবলারের কাছে স্মৃতি বলতে রয়েছে শুধুই ব্যর্থতা। পেছন ফিরে নিজেকে দেখলে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন শোভন। মাঝেমধ্যেই বলে ওঠেন, হয়তো আরেকটু খেলতে পারতাম।
নিজের অতীতকে ফিরে ফিরে দেখেন শোভন চক্রবর্তী
স্যেপ ব্লাস্টারের সামনে জীবনের প্রথম হাইভোল্টেজ ডার্বি খেলেছেন বঙ্গ ফুটবলার। লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ তখন কার্লোস পেরেরার হাতে। ব্রাজিলের সেই নামজাদা কোচের নোটবুকেও নিজের নাম তুলেছিলেন শোভন। যুবভারতীর সেই ঝাঁঝালো ডার্বির কথা আজও মনে আছে। মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গলের সেই ঝলমলে ডার্বিতে পরিবর্ত হিসেবে নেমেছিলেন তিনি।
তবে প্রথম ডার্বির স্মৃতি খুব একটা ভাল নয় তাঁর। সেবার মোহনবাগানের কাছে হেরে একেবারে নাক কাটা গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল বাহিনীর। সে ম্যাচে গোল করা ফুটবলারের মধ্যে সবই ব্রাজিলের। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করেছিলেন এডমিলসন। মোহনবাগানকে জয়ের পথে ঠেলে দিয়েছিলেন ডগলাস এবং ব্যারেটো। তাঁদের সাথেও সময় কাটিয়েছেন শোভন। ব্যারেটোর সাথেও নাকি রুম শেয়ার করেছেন। ফুটবল থেকে দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকার পর আজ সে সব কথাই বারবার উসকে যায় বাঙালি ফুটবলারের।
অবশ্যই পড়ুন: ভয়ঙ্কর ট্র্যাফিক জ্যামে ৬ ঘণ্টা মহিলার সঙ্গ দিলেন Rapido ড্রাইভার, নিলেন না অতিরিক্ত চার্জও
ইস্টবেঙ্গলের পাশাপাশি মহামেডানেও খেলেছেন শোভন চক্রবর্তী। সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বঙ্গ ফুটবলার বলেন, ইস্টবেঙ্গল থেকে মহামেডানে যাওয়ার পরে আমাকে কোচ সাব্বির আলি প্রথম কয়েকটা ম্যাচে সুযোগ দেননি। যদিও ক্লাব কর্তারা আমার কথা বলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাতে রাজি হননি কোচ। পুরনো সেই সব ঘটনাই বারবার মনে করে নিজের স্মৃতিকে ঝালিয়ে নেন শোভন। ব্যর্থতার স্মৃতির মাঝেই রয়েছে প্রবল আফসোসও। সম্প্রতি সে বিষয়েও মুখ খুলেছিলেন ইস্টবেঙ্গল প্রাক্তনী।
শোভন বলেন, ভাল একটা চাকরি পেতে পারতাম। রেলের চাকরি আমার বাঁধা ছিল। চাকরি করতে না গিয়ে গেছিলাম ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে। তাছাড়াও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ইন্টারভিউ দেওয়ার পরও ভেবেছিলাম হয়তো চাকরিটা হবে, কিন্তু কোনও এক কারণে সেটা হয়নি। এসব কথা বলতে বলতেই যেন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শোভন। তবে দুঃখের মাঝেও রয়েছে কিছু শুভ স্মৃতি। শোভন বলেন, দুই প্রধানে খেলেছি। বড় বড় ক্লাবের প্রস্তাব পেয়েছি। এগুলো সব সুখের স্মৃতি। কিন্তু আফসোসটাও যে রয়ে গেছে। শোভন বারবার বলেন, আরেকটু খেলতেই পারতাম। বছর চারেক চাকরি করেও চক্রবর্তীর দাবি, হয়তো আরেকটু ভাল চাকরি আমার পাওয়া উচিত ছিল।