প্রীতি পোদ্দার, নলহাটি: রেশন দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে এক আলাদাই উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আর সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এরপরেই একাধিক জায়গায় রেশন বণ্টনে কারচুপির অভিযোগ উঠে আসছে। এবার সেই অভিযোগ উঠল বীরভূমের নলহাটিতে (Nalhati)। জানা গিয়েছে, খাদ্য সামগ্রীর পরিবর্তে পাল্লায় ইট, বালি দিয়ে বায়োমেট্রিক লিঙ্ক করিয়ে নেন ডিলার। এমনকি ওজনের তুলনায় কম সামগ্রী দেওয়া হয়।
অভিনব কায়দায় রেশনে কারচুপি!
রিপোর্ট মোতাবেক, বীরভূমের নলহাটিতে রেশন বণ্টন ব্যবস্থায় ঘটল এক চাঞ্চল্যকর বেনিয়মের অভিযোগ। গ্রাহকদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার বদলে ওজন মাপার যন্ত্রে বালি ভর্তি কৌটো, বাটখারা আর ইঁট চাপিয়ে বায়োমেট্রিক লিঙ্ক করে নিচ্ছেন নলহাটির বাগানপাড়া, কুশিপুর ও শেরগ্রামের রেশন ডিলার গোলাম রসুল। স্থানীয়দের অভিযোগ গ্রামে এসে রেশন সামগ্রী দেওয়ার কথা ওই রেশন ডিলারের। কিন্তু তিনি গ্রামে গ্রামে গেলেও রেশন সামগ্রীর বদলে ওজনমাপার যন্ত্র, বাটখারা, বালি ভর্তি কৌটো ও ইঁট নিয়ে আসেন। এবং যন্ত্রে সেগুলি চাপিয়ে গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক ছাপ নিয়ে লিঙ্ক করিয়ে নিয়ে চলে যান। এরপর সপ্তাহ খানেক পর তাঁর বাড়িতে গিয়ে সেই খাদ্যসামগ্রী আনতে গেলে ওজনে কম সামগ্রী দেওয়া হয়।
অভিযোগ অস্বীকার রেশন ডিলারের
দিনের পর দিন ধরে রেষণ সামগ্রী দেওয়ার ক্ষেত্রে কারচুপি করার অভিযোগ উঠে আসছে রেশন ডিলার গোলাম রসুলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ জানানো হলেও ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। শেষে স্থানীয়দের তরফে গত মঙ্গলবার কুশিপুর গ্রামে রেশন ব্যবস্থায় ‘অভিনব কায়দায়’ বেনিয়ম ধরা পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি এবং অভিযোগের ভিত্তিতে ডিলার গোলাম রসুল জানিয়েছেন, “দুর্নীতির কোনও উদ্দেশ্য নেই। রাস্তা খারাপ থাকলে বা বৃষ্টি হলে খাদ্যসামগ্রী ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। গাড়িরও ব্যবস্থা নেই, তাই গ্রামে গ্রামে গিয়ে আগে বায়োমেট্রিক লিঙ্ক করে নেন, পরে বাড়ি থেকে রেশন বিলি করেন। তাঁর বাড়ি কাছেই, উপভোক্তাদের তেমন অসুবিধা হয় না। কিন্তু ওজনে কোনো সামগ্রী কম দেওয়া হয় না।”
আরও পড়ুন: বারাসত মেডিক্যালে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ!
রেশন ডিলারের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, “বাগানপাড়া থেকে কুশিপুর বা শেরগ্রামের দূরত্ব এক কিলোমিটারেরও বেশি। দিনমজুর পরিবারগুলিকে কাজ ফেলে অতদূরে রেশন নিতে যেতে হয়। এতে সময় যেমন নষ্ট হয়, তেমনই কম ওজনের সামগ্রী পেয়ে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বিডিও সৌরভ মেহেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে যদি অভিযোগ জমা পড়ে, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে।