প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ভোট এল ভোট গেল, কিন্তু প্রতিশ্রুতি অধরাই থেকে গেল। বহু বছর ধরে বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছেন না কোচবিহারের সাংসদ, এমতাবস্থায় নদী ভাঙনের আতঙ্কে দিশেহারা দিনহাটা ১নং ব্লকের দ্বারিকামারি গ্রামের বাসিন্দারা। তাই এবার ক্ষোভের বসে কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানোর কথা বললেন দিনহাটা দ্বারিকামারি গ্রামের মহিলারা।
ঘটনাটি কী?
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙনের আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কোচবিহার জেলার দিনহাটা ১নং ব্লকের দ্বারিকামারি গ্রামের বাসিন্দারা। অনেক বছর ধরেই বুড়া ধরলার নদীর ভাঙন বেড়েই চলেছে। ফলে ভারী বৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা থেকেই যায়। তার উপর কয়েক বছরে এই বুড়া ধরলা নদীগর্ভে ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে গ্রামবাসীদের বসতভিটা সহ কৃষি জমি। যা নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে অভিযোগ জানানো হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। শেষে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার, ১নং ব্লকের দ্বারিকামারি গ্রামের মহিলা বাসিন্দারা বিক্ষোভে নামেন। তাঁদের একটাই দাবি লক্ষ্মীর ভান্ডার দিতে হবে না, অন্ততপক্ষে নদীর বাঁধটা যেন ঠিকভাবে হয়ে যায়।
বিক্ষোভে সামিল এলাকার মহিলারা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদী ভাঙন প্রতিরোধে অবিলম্বে নদী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দ্বারিকামারি গ্রামের বাসিন্দারা দিনহাটা মাতালহাট রাজ্য সড়কের ছোট নাচিনা এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হন। এদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত চলে এই অবরোধ। কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ নির্বাচনের আগে নাকি জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া গলায় তুলসীর মালা ছুঁয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ভোটে জিতলে নদীর বাঁধ নির্মাণ করে দেওয়া হবে। কিন্তু নির্বাচনে জেতার পর তার ছায়াটুকুও দেখেনি গ্রামবাসীরা। যার দরুন অসহায় পরিস্থিতি এই গ্রামের বাসিন্দাদের।
এদিন গ্রামের মহিলা বাসিন্দারা কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, যেহেতু সাংসদ প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি তাই এবার ভোটের জন্য প্রার্থনা করতে আসলে তাকে জুতার মালা পরানো হবে। এমনকি ঝাঁটা নিয়েও তাকে তাড়ানো হবে বলে দাবি করেন তাঁরা। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ংকর আকার ধারণ করে যে তা সামলানো একপ্রকার দুষ্কর হয়ে ওঠে পুলিশের কাছে, শেষে পরবর্তীতে ব্লক দপ্তরের এক প্রতিনিধি দলের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরের শ্যামসুন্দরপুর কোলিয়ারিতে বড়সড় দুর্ঘটনা! খনিতে জল ঢুকে মৃত্যু এক শ্রমিকের
কোচবিহার জেলার দিনহাটা ১নং ব্লকের দ্বারিকামারি গ্রামের এই পরিণতি দেখে সংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপির জেলা সম্পাদক অজয় রায়। তিনি বলেন, “ বর্তমানে যে সরকার চলছে সেই সরকার শুধু মাত্র প্রতিশ্রুতি দিয়েই জনসাধারণকে বোকা বানিয়ে চলেছে। তাই তো নির্বাচন শেষ হলেই জনগণের কথা ভাবেন না তাঁরা। তাই সেক্ষেত্রে এখন উচিত এইমুহুর্তে ওই এলাকায় যে সকল নির্বাচিত প্রার্থী রয়েছে তাঁদের গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলা এবং তাঁদের দাবিগুলির ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ করা।