প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার ছিল শাসকদলের জেতার মূল চাবিকাঠি। এককথায় বলা যায় এটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট। তাইতো প্রতিবার নির্বাচনের আগে এই সরকারি প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই রাজ্যের মহিলারা আরও উপকৃত হচ্ছেন। মাসে মাসে মিলছে ১০০০-১২০০ টাকা। আর এবার সেই লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রসঙ্গ তুলে স্থানীয় মহিলাদের ধমক দিলেন জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বিডিও প্রশান্ত বর্মণ।
লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে স্থানীয়দের ধমক BDO-র
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও সূত্রে দেখা গিয়েছে যে, রাজগঞ্জের শিকারপুর পঞ্চায়েতের নর্থ বেঙ্গল ফার্ম গ্রামের বেহাল রাস্তার সমাধান করার দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ডেকেছে সেখানকার স্থানীয় মহিলারা। যার জেরে অবরুদ্ধ হয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা। অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে মহা সমস্যায় পড়েছে অ্যাম্বুলেন্স সহ একাধিক মানুষ। সেখানকার স্থানীয় পুলিশ শত চেষ্টা করেও কিছুতেই সেই বিক্ষোভ ওঠাতে না পারায় বাধ্য হয়ে সেখানে আসেন BDO অফিসার প্রশান্ত বর্মণ। মহিলারা রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে চোটপাট দেখাতে গেলে পাল্টা রাগ দেখান সেখানকার BDO। তিনি বলেন, “বিনামূল্যে পানীয় জল, লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছেন। সময় হলে রাস্তাও হবে, এখন বাড়ি যান’।
বেহাল দুর্দশা রাস্তার
এদিকে বিডিওর এহেন বক্তব্যের পরই ফুঁসে ওঠেন স্থানীয় মহিলারা। পাল্টা তাঁদের দাবি, ‘চাই না লক্ষ্মীর ভান্ডার, আগে রাস্তা করে দিন’। এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পাল্টা বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার না লাগলে চলে আসবেন, নাম কেটে দেব। ১০০ মহিলার নাম কাটলে অনেক রাস্তা করা যাবে।’ দিনের পর দিন রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে সেখানকার BDO অফিসে দরখাস্ত জমা দেওয়া হলেও কিছুতেই আশার আলো দেখতে পারছেন না স্থানীয়রা। তার উপর ভারী বৃষ্টির জেরে গত কয়েকদিনে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপের দিকে এগোচ্ছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কার্যত চষা খেতের চেহারা নিয়েছে। সেই কারণে এবার প্রতিবাদে নেমেছিল রায়গঞ্জের মানুষেরা।
আরও পড়ুন: স্কুলের মধ্যে ছাত্রীর শ্লীলতাহানি! গুরুতর অভিযোগ পাথরপ্রতিমার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
শুক্রবারের এই অবস্থান বিক্ষোভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে BLO স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, “রাস্তা নিয়ে বিক্ষোভ, তা মেরামতের খরচ পঞ্চায়েতের তরফে বহন করা সম্ভব নয়। জেলা পরিষদ বা সাংসদ-বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ প্রয়োজন। তার জন্য কখনোই রাস্তায় বসে অবস্থান বিক্ষোভ করা যুক্তিসঙ্গত নয়।” এই কথা বার বার বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো কাজ না হওয়ায় মেজাজ হারান বিডিও।
এলাকার তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিডিওকে ফোন করছি। তবে তাঁর ফোন বন্ধ। কাজেই তিনি কী বলেছেন, সেটা যাচাই করতে পারছি না। তবে বিক্ষোভে বিজেপি নেতারাও ছিলেন। ব্যাপারটা বিজেপির ষড়যন্ত্র।”