প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কিছুদিন আগে লোকসভায় অধিবেশন চলাকালীন নিষিদ্ধ ই-সিগারেট টানছিলেন তৃণমূলের এক সাংসদ! সেই সময় ওই সাংসদের বিরুদ্ধে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে নালিশ ঠুকেছিলেন হিমাচল প্রদেশের বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। অভিযোগ করে যথাযথ পদক্ষেপের আর্জি জানান তিনি। স্পিকারও ওই সাংসদকে সতর্ক করে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনও অভিযোগ পেলে তিনি সংসদের যে কোনও সদস্যের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করবেন। এবার সেই সাংসদের বিরুদ্ধে লোকসভায় বসেই ই-সিগারেট খাওয়ার ভিডিও (Viral Video) ভাইরাল করল বিজেপি।
লোকসভায় ই-সিগারেট টানছেন তৃণমূল সাংসদ
লোকসভার অধিবেশন কক্ষে বসে বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর, তৃণমূলের যে সাংসদের বিরুদ্ধে প্রায়ই ই-সিগারেট তথা ভেপিং করার অভিযোগ তুলেছিলেন সেই সাংসদ আর কেউ নন, বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। আর এবার সেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে আজ অর্থাৎ বুধবার, বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, সংসদের ভেতরে কীর্তি আজাদ হাতে কিছু একটা নিয়ে টানছেন। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে অমিত মালব্য জানান, “বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর যে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে সংসদের ভিতরে ভেপ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন, তিনি কীর্তি আজাদ।” তিনি আরও জানান সংসদের মতো সংবেদনশীল জায়গায় নিয়ম-কানুনকে তোয়াক্কা না করে ই-সিগারেট লুকিয়ে ভেপ করা “চরম দুঃসাহসের” পরিচয়।
The TMC MP accused by BJP MP Anurag Thakur of vaping inside Parliament is none other than Kirti Azad. For people like him, rules and laws clearly hold no meaning. Just imagine the audacity, hiding an e-cigarette in his palm while in the House!
Smoking may not be illegal, but… pic.twitter.com/kZGnYcP0Iu
— Amit Malviya (@amitmalviya) December 17, 2025
অভিযোগ অস্বীকার সাংসদের
সমাজমাধ্যমে বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদের এই ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক অন্দরে তুমুল শোরগোল শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, ”সংসদে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তার উপর ভারতে ই-সিগারেট আইনত নিষিদ্ধ। অথচ হাতের তালুতে লুকিয়ে ই-সিগারেট ব্যবহার করার সাহস দেখাচ্ছেন একজন সাংসদ। নিয়ম-কানুন যে তাঁর কাছে কোনও গুরুত্বই রাখে না, সেটাই প্রমাণিত।” যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি India Hood। এদিকে এই ভাইরাল ভিডিওর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন। তাঁর মতে নির্বাচনের আগে শাসকদলের প্রতি কালী ছেটাতে বিরোধী দলগুলি অপপ্রচার করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ১১ বছরে কত অনুপ্রবেশ? জানাল কেন্দ্র
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিকোটিনযুক্ত ই-সিগারেট মারাত্মকভাবে আসক্তি বাড়ায় এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। জানা গিয়েছে এই ই-সিগারেটে ব্যবহৃত একাধিক উপাদান ক্যানসার, ফুসফুস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই কারণেই ২০১৯ সাল থেকে ভারতে ই-সিগারেট প্রস্তুত, কেনাবেচা ও সেবন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। যে বা যারা এই সরকার অনুমোদিত আইন ভাঙবেন তাঁর বিরুদ্ধে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা ও এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা বিশেষ করে লোকসভায় বসে সাংসদের বিরুদ্ধে ভেপিং নেওয়ার ঘটনা এই আইনের কঠোরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।