‘শতাব্দীর স্বপ্নপূরণের প্রতীক’ রাম মন্দিরে ধর্মধ্বজ উত্তোলনের পর বিশেষ বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

Ayodhya Temple Flag Hoisting

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আজ অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রথমবারের মতো প্রধান শিখরে উত্তোলন (Ayodhya Temple Flag Hoisting) করা হল বিশেষ ত্রিভুজাকার গেরুয়া ধর্মধ্বজ। তাইতো আজ সকাল থেকেই শহরজুড়ে উৎসবের আবহ, আর এই মুহূর্তকে আরও আধ্যাত্মিক গড়ে তুলতে হাজির হয়েছে অনেক সাধু-সন্ত ও ভক্ত। অনেকেই তাই একে ‘দ্বিতীয় প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ বলেই অভিহিত করছেন। এমতাবস্থায় রামমন্দিরে এই ঐতিহাসিক ধ্বজারোহণে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন নরেন্দ্র মোদি।

রাম মন্দিরে পতাকা উত্তোলন

প্রায় দু’বছর আগে খুলে গিয়েছিল রামমন্দিরের দরজা। আর এবার রামলালার ‘ঘর’ তৈরির কাজ সুসম্পন্ন হল। সেই কারণে তারই সূচক হিসেবে এই বিশেষ দিন উপলক্ষে রামমন্দির থেকে ধ্বজা ওড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এই বিশেষ উৎসবের সাক্ষী হতে হাজির হয়েছিলেন অন্তত ৮ হাজার অতিথি। বেলা ১১টা ৫০ নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে শুরু হয় ধ্বজারোহণ পর্ব। নীচ থেকে ধীরে ধীরে মন্দিরে সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উঠে যায় ন্যায়ের ধ্বজা। গোটা প্রক্রিয়ার সময়ে আবেগঘন চোখে ধ্বজার দিকে তাকিয়ে ছিলেন মোদি। “জয় শ্রী রাম” ধ্বনিতে পুরো প্রাঙ্গণ প্রতিধ্বনিত হয়। এদিকে ধ্বজারোহণ পর্ব শেষ হতেই করজোড়ে নমস্কার করেন মোদি। তারপর ফুল উৎসর্গ করেন মোদি-ভাগবত দু’জনেই।

ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

রাম মন্দিরের পতাকা উত্তোলনের পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্দিরের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন এবং জাতির জন্য এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য সম্পর্কে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন তিনি। নরেন্দ্র মোদি বলেন, “শতাব্দীপ্রাচীন ক্ষতে আজ প্রলেপ পড়ল। বহু শতকের যন্ত্রণার অবসান। শতাব্দীর সংকল্প আজ পূর্ণতা পেল। আজ সেই যজ্ঞের সমাপ্তি, যার আগুন ৫০০ বছর ধরে জ্বলছিল। সেই যজ্ঞ এক মুহূর্তের জন্যও বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “আজ অযোধ্যা শহর ভারতের সাংস্কৃতিক চেতনার আরও এক শীর্ষবিন্দুর সাক্ষী থাকল। আজ সমগ্র ভারত, সমগ্র বিশ্ব, রামনামে আচ্ছন্ন। প্রতিটি রামভক্তের হৃদয়ে রয়েছে অতুলনীয় তৃপ্তি, সীমাহীন কৃতজ্ঞতা, অপরিসীম আনন্দ।” এছাড়াও এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বারবার উঠে আসে ঐতিহাসিক যাত্রাপথ এবং তার সমাপ্তির গোটা মুহূর্ত যা গোটা দেশবাসীকে এক আবেগে আবদ্ধ করে।

আরও পড়ুন: ‘পুলিশ দলদাস, ওদের ভোটের ডিউটিতে রাখা যাবে না!’ সরব শুভেন্দু অধিকারী

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৫ অগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই রামমন্দিরের ভূমি পুজো করেছিলেন। পরে গতবছর ২২ জানুয়ারি গর্ভগৃহে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় তখনও মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়নি। প্রায় দু’বছর পর মন্দির নির্মাণ শেষ হল। অর্থাৎ এই মন্দির এবার পুরোপুরিভাবে রামলালার ধর্মীয় আবাসে রূপান্তরিত হয়ে উঠেছে। ধ্বজারোহণের পর মন্দিরে ৪৪টি দরজাই খুলে দেওয়া হবে ধর্মীয় আচারের জন্য। আজ অবশেষে পতাকা উত্তোলন সেই অধ্যায়ের চূড়ান্ত পর্ব বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Comment