বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: বর্তমানে পরিস্থিতি যা, তাতে সরাসরি শত্রু বলা না গেলেও আদতে ভারতের ক্ষতি চেয়ে এসেছে চিন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। তালিকার প্রথমে থাকা দুই বিরোধী পক্ষ বারংবার ভারতকে ফাঁপরে ফেলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনার পতনের পরই বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বের ভিত অনেকটাই আলগা হয়েছে ভারতের।
সবমিলিয়ে বলাই যায়, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ভারতের শত্রু দেশের তালিকায় একেবারে শীর্ষে রয়েছে এই তিন নাম! তবে জানলে অবাক হবেন! শত্রুতা সত্ত্বেও একেবারে সরাসরি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এই তিন দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সবদিক থেকে ছিন্ন করছে না ভারত। আসলে বন্ধু দেশের পাশাপাশি এই তিন দেশ থেকেও বহু পণ্য আমদানি করে দিল্লি (India Import)। কোন দেশ থেকে কী আমদানি হয় এদেশে? রইল বিস্তারিত।
চিক থেকে ভারতের আমদানি
একসময়ের বন্ধু দেশ চিন, আজ নানান দিক থেকে পরোক্ষভাবেই ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মুখে বন্ধুত্বের কথা বললেও পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো বিরোধীদের হাত করে দিল্লির বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্রে পা বাড়িয়েছে বেইজিং। কিন্তু সেসব জানা সত্বেও চিন থেকে একাধিক পণ্য আমদানি করে ভারত।
সেই সূত্রে বলি, অন্যান্য বন্ধু দেশের পাশাপাশি চিন থেকে টেলিভিশন, খুচরো যন্ত্রাংশের মতো একাধিক ইলেকট্রনিক পণ্য, সাউন্ড রেকর্ডারের মতো বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী আমদানি করে থাকে ভারত। বলে রাখি, 2021-22 আর্থিক বছরে চিন থেকে 3,000 কোটি ডলারের ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি করেছিল ভারত। যা ছিল মোট আমদানির 70 শতাংশ।
পাকিস্তান থেকে ভারতের আমদানি
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি থেকে শুরু করে নানান ক্ষেত্রে ইসলামাবাদকে কূটনৈতিক ভাবে চাপে রেখেছে দিল্লি। আপাতত বন্ধ হয়ে রয়েছে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য। তবে বলে রাখি, বছরের বিভিন্ন সময় ভারত মূলত পাকিস্তান থেকে রক সল্ট, সুতির চাদর, চামড়া, বিভিন্ন কেমিক্যাল, ড্রাই ফ্রুটস সহ অন্যান্য বেশ কিছু পণ্য আমদানি করে।
তবে এইসবের মাঝে ভারত পাকিস্তানের ওপর যে পণ্যটির জন্য সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল ছিল তা হল সন্দক লবণ বা রক সল্ট। তবে আপাতত আর সেই নির্ভরশীলতা নেই। বিগত কিছু বছর হয়েছে সৌদি আরব সহ অস্ট্রেলিয়ার মতো বেশ কিছু দেশ থেকে সন্দক লবণ আমদানি করছে দিল্লি।
বাংলাদেশ থেকে ভারতের আমদানি
সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী হওয়ার দৌলতে ভারত থেকে একাধিক প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নেয় ইউনূসের বাংলাদেশ। আর সেই সূত্র ধরেই ভারত ওপার বাংলা থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানি করে। বলে রাখি, ভারত বাংলাদেশ থেকে মূলত টেক্সটাইল ও রাসায়নিক পণ্য আমদানি করে থাকে। যা ফ্যাশন শিল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রসদ। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, বস্ত্র শিল্পের জন্য বাংলাদেশের ওপর কিছুটা নির্ভরশীল হলেও, বস্ত্র শিল্পের কাঁচামাল অর্থাৎ সুতো কিন্তু ভারত থেকেই কিনে নিয়ে যায় ওপার বাংলার ব্যবসায়ীরা।
অবশ্যই পড়ুন: ট্রেনের টয়লেটে পড়ে যায় সোনার চেন! ট্যাঙ্ক ভেঙে উদ্ধার করে দিল ভারতীয় রেল
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সাথে সংঘর্ষের পরই ভারতের শত্রুর সংখ্যা বেড়েছে। সেই তালিকায় নাম জুড়েছে পাক বন্ধু তুরস্ক ও আজারবাইজানের। সেই সূত্রে বলে রাখি, এই তুরস্ক থেকেও বেশ কিছু পণ্য আমদানি করে ভারত। জানা যায়, তুর্কি থেকে মূলত হাতে তৈরি কার্পেট, মোজাইক ল্যাম্প ও টাইলস, এছাড়াও মিনারেল অয়েল, আপেল, বিভিন্ন নিউক্লিয়ার রিয়াক্টেটর থেকে শুরু করে বেশ কিছু রাসায়নিক আমদানি করে ভারত। অন্যদিকে আরেক পাকিস্তানপ্রেমী আজারবাইজান থেকে মূলত ব্যাপক পরিমাণে তেল আমদানি করে দিল্লি।