সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ সকলের সাধের সোনাঝুরির হাট (Shonajhuri Haat) কী আর থাকবে না? এই নিয়ে সকলেই প্রশ্ন তুলছে। এমনিতেই সোনাঝুরির জমি নিয়ে বিগত বহু বছর ধরে বিতর্ক চলছে। বন দফতরের জমিতে কে কীভাবে অবৈধ নির্মাণ থেকে শুরু করে হোটেল, রিসর্ট তৈরি করতে পারে সেই নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। সোনাঝুরির ভবিষ্যৎ কী? আর এই হাট যদি উঠেও যায় তাহলে কোথায় স্থানান্তর করা হবে? সেই নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসা করছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
ফের প্রশ্নের মুখে সোনাঝুরি হাট
এমনিতে শান্তিনিকেতন ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হলে সকলের বাকেট লিস্টে এই সোনাঝুরি থেকে শপিং করা থাকবেই থাকবে। এখানে হাতের তৈরি জিনিস থেকে শুরু করে প্রসাধনী, পোশাক, ব্যাগ, ঘর সাজানোর জিনিস কী না বিক্রি হয়। তবে এই হাটের ভবিষ্যৎ কিনা এখন বিশ বাঁও জলে। এই হাটের জন্য, অবৈধ নির্মাণের জন্য জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে গলা ফাটাচ্ছেন পরিবেশপ্রেমীরা। এমনকি জাতীয় পরিবেশ আদালতে এই বিষয়ে মামলা অবধি চলছে।
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, সোনাঝুরি বা কোপাই নদীর ধার থেকে এই হাট উঠলে বোলপুরের বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজারে যেতে পারে। এদিকে এসবের মধ্যে এখন একটি বিষয় মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, আর সেটা হল শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গার জমি দখলের গল্প।বর্তমান পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত প্রায় এক দশকে সোনাঝুরি থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের বিস্তীর্ণ এলাকার সরকারি খাসজমি, বন দফতরের জমি দখল হয়ে গিয়েছে। দখল হয়ে রয়েছে বহু সরকারি পাট্টার জমি, আদিবাসীদের জমিও। সেইসব জমিতে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক বিলাসবহুল রিসোর্ট, থেকে শুরু করে বসত বাড়ি, হোটেল।
শান্তিনিকেতনে অবৈধ নির্মাণ!
এখন কেউ যদি শান্তিনিকেতনে জমি কিনতে যান তাহলে দাম শুনে আত্মারাম খাঁচা হয়ে যেতে পারে। এইসব বেআইনি নির্মাণে জেলার পাশাপাশি লগ্নি রয়েছে কলকাতার বহু পুঁজিপতির। অনেকের ধারণা, এই পুঁজিপতি থেকে শুরু করে হোটেল, রিসোর্ট ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত রয়েছে শাসকদলের দাপুটে নেতাদের। এমনকি প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের একাংশেরও হাত রয়েছে বলেই এরকম নিত্য নতুন অবৈধ নির্মাণ গড়ে উঠছে কবিগুরুর জায়গায়।
১৯৮০সালের বন সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থী বলে অভিযোগ। ওই রায়ে স্পষ্ট বলা আছে, বনভূমি হিসেবে ঘোষিত জমির উপর অ-বনজ কাজকর্ম কোনওভাবেই হতে পারে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও কাদের মদতে হচ্ছে এইসব কারবার? পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূলের নেতাদের পাশাপাশি উচ্চপদস্থদের একাংশই এসব অবৈধ কারবারের সঙ্গে জড়িত। এই বিষয়ে প্রশাসনেরও কোনও হেলদোল নেই। ফলে আগামী দিনে কী হবে এখন সেটাই দেখার।