সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বাংলার রেল স্টেশনগুলোতে টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে যাত্রীদের যে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হচ্ছে, এটি নতুন কোনও ঘটনা নয়। এমন অভিযোগ বহুদিন ধরেই আসছে। তবে সম্প্রতি নদীয়ার শান্তিপুর (Shantipur) স্টেশনে আবারও এমন এক ঘটনা সামনে এল, যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল হৈচৈ শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি কী?
সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্টেশনের টয়লেটে কোথাও সরকারি রেট চার্ট ঝোলানো নেই, অথচ যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত চার্জ। এক মহিলা যাত্রী এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন যে, রেট না লেখা থাকলেও কেন অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হবে? এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখনই পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন এক আরপিএফ কর্মী গজেন্দ্র সিং। তবে সমস্যা তখনই জটিল হয়ে ওঠে, যখন ওই মহিলা ভিডিও করতে শুরু করে। ওই আরপিএফ তাঁকে আপত্তি জানায় যে, ভিডিও করা যাবে না। তবে মহিলা থামেননি। এখান থেকেই শুরু হয় বিতর্ক।
ভাষা নিয়ে বিতর্কে আগুন
ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আরপিএফ কর্মী বাংলার মাটিতে থেকেই বারবার হিন্দিতে কথা বলছে। মহিলা যাত্রী তাঁকে বলছেন যে, আপনি পশ্চিমবঙ্গে কাজ করছেন, আপনাকে বাংলাতেই কথা বলতে হবে। তবে তিনি দাবি করেন যে, হিন্দি রাষ্ট্রীয় ভাষা, আমি বাংলায় কথা বলব না। এখানেই বাড়তে থাকে আরও উত্তেজনা।
আসলে ভারতীয় সংবিধানে কোনও ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। হিন্দি এবং ইংরেজিকে অফিসিয়াল ল্যাংগুয়েজ বলা হলেও ২২ টি আঞ্চলিক ভাষাকে সংবিধানের তরফ থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে বাংলা অন্যতম। এমনকি এর পাশাপাশি ওড়িয়া, কানাড়া, অসমীয়া, মালায়ালাম, তামিল প্রভৃতি ভাষা রয়েছে।
গায়ে হাত তোলারও হুমকি
ওই মহিলা অভিযোগ করেন যে, আরপিএফ কর্মী শুধুমাত্র অতিরিক্ত চার্জ তোলা রক্ষার পক্ষপাত করেননি, বরং গায়ে হাত তোলারও হুমকি দেন। এমনকি বলা হয় যে, আপনার বিরুদ্ধে কেস করব। ওই ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে মহিলা লিখেছেন, “শান্তিপুর স্টেশনে টয়লেটে বেআইনিভাবে টাকা তোলা হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকা রেলের এই দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ হচ্ছে। আর বাঙ্গালীরা প্রতিবাদ করলেই আরপিএফ জোর করে হিন্দিতে কথা বলছে।”
আরও পড়ুনঃ প্রকাশিত হল রেলের গ্রুপ ডি পরীক্ষার দিনক্ষণ! অ্যাডমিট কবে পাবেন, পরীক্ষা কোথায়?
এমনকি নেটিজেনরা কমেন্ট করছে, “যে সমস্ত বাঙালি ওদের সাপোর্ট করছে, ওদেরকে বলছি যে তোমরা বিহার অথবা উত্তর প্রদেশে গিয়ে বাংলায় কথা বলো। আর বলো বাংলা ইন্ডিয়ার ভাষা। আর ওদেরকে জোর গলায় কথা বলতে বলো। তাহলেই তোমরা টের পাবে…!”