প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হানা বাড়ির থেকেও চরম দুরাবস্থা মালদার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (Bad Condition Of Malda School)! সরকারি স্কুল হলেও নেই পড়ুয়াদের যথোপযুক্ত পড়াশোনার পরিকাঠামো, নেই কোনো গেট, রান্না ঘর এবং শৌচাগার। শৌচকর্ম সারতে ঝোপের ধারে যেতে হচ্ছে শিক্ষিকা থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের। বেহাল সেই স্কুলেই নাকি রোজই বসে মদের আসর চলে অসামাজিক কাজ। বারংবার অভিযোগ জানানো হলেও চুপ করে রয়েছে প্রশাসন। এবার সেই চিত্র তুলে শাসক দলকে কটাক্ষ করল বিজেপি।
বেহাল অবস্থা মালদার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৩ সালে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেষ্টপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। প্রথম দিকে খাতায়-কলমে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১০৪ জন। কিন্তু দুঃসময়ে স্কুলে আসে মাত্র ২০ থেকে ২৫ জন। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যাটা আরও কমতে থাকে। বর্তমানে ওই স্কুলে রয়েছে ৪ জন শিক্ষিকা। এদিকে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত অবস্থা হানাবাড়ির থেকেও খুব খারাপ। এমতাবস্থায় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সাকিলা বানু অভিযোগ জানিয়েছেন যে বহুবার ব্লক প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, শিক্ষা দফতর, পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন কিন্তু কোনো কাজেই আসেনি। এবার সেই স্কুল বাড়িটিকে নিয়ে শাসকদলকে খোঁচা দিল বিজেপি।
তৃণমূলকে কটাক্ষ করে পোস্ট বিজেপির
রিপোর্ট মোতাবেক আজ অর্থাৎ বুধবার, বঙ্গ বিজেপির পেজ থেকে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের ভেষ্টপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র নিয়ে পোস্ট করে। তাঁরা অভিযোগ তোলেন যে, “সরকারি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার খুবই বেহাল দশা। ছাত্র ছাত্রীদের পড়ার কোনো সুব্যবস্থা নেই, এমনকি এখানে বিদ্যুৎও নেই। গোটা স্কুল পাঁচিলে ঘেরা থাকলেও নেই কোনও গেট। তবে স্থানীয়দের তরফে শোনা যায় গেট থাকলেও সেটিও নাকি চুরি হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চতুর্দিকে ছড়িয়ে রয়েছে মদের বোতল। এমনকি রোজই এখানে সমাজবিরোধীদের আড্ডা বসে বলে জানা গিয়েছে। বারংবার সেই নিয়ে প্রশাসনের কাছে দ্বারস্থ হলেও নেওয়া হয়নি পদক্ষেপ। এটা কি সেই পশ্চিমবঙ্গ যেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে একসময় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং উকিল হয় উঠেছে অনেকে।”
আরও পড়ুন: মাত্র ২০ দিনেই ১ লাখ পরিষেবা দিল মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট! শুভেচ্ছা বার্তা মমতার
প্রসঙ্গত, হরিশ্চন্দ্রপুর স্কুলটি গ্রাম ছাড়িয়ে ৩০০ মিটার দূরে নির্জন এলাকায় অবস্থিত। গ্রামের রাস্তাও খুবই বেহাল অবস্থা। স্কুলে যাওয়ার জন্য নেই ঠিকঠাক কোনও পাকা রাস্তা। দুই দিকে জমি, যেতে হয় মাঝের সরু আলপথ দিয়েই। স্কুলে বাচ্চাদের মিড ডে মিল রান্নার জন্য নেই কোনো পাকা রান্নাঘর এমনকি পানীয় জলের জন্য পরে রয়েছে একটা ভাঙাচোরা নলকূপ যেখানে থেকে বের হয় শুধু আয়রনযুক্ত নোংরা জল। এদিকে এই বেহাল দশা নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করলেও এখনো পর্যন্ত শাসকদলের তরফে কোনরকম প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি।