প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ডিসেম্বর মাস পড়তে না পড়তেই এবার রাজ্য জুড়ে জাঁকিয়ে নেমেছে শীত। কনকনে উত্তুরে হাওয়ার দাপটে গরম জামাকাপড় পড়ে একদম টিপটপ হয়ে গিয়েছে রাজ্যবাসী। এদিকে পারদ নামতেই বেড়েছে দূষণের মাত্রা। জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, শহরে একাধিক জায়গায় দূষণের মাত্রা ছাড়িয়েছে ৩০০। এমনকি দূষণমূলক শহর দিল্লিকেও হার মানিয়েছে কলকাতার (Kolkata) এই দূষণ, যা কার্যত চিন্তার বিষয় বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের একাংশ।
দিল্লিকে টপকালো কলকাতা
শীতের পারদ নামতেই প্রতি বছর দিল্লির হাল অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায়। তাইতো দেশের বায়ু দূষণ নিয়ে আলোচনা উঠলে প্রথমেই উঠে আসে দিল্লির নাম। কিন্তু এবার অন্য চিত্র ফুটে উঠল। দিল্লিকে পিছনে ফেলে দূষণের শীর্ষে নাম উঠে এল কলকাতার। রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে কলকাতার ময়দানে বায়ুর গুণমান সূচক ছাড়াল ৩০০-র গণ্ডি। রাত ৮টা নাগাদ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আশপাশে AQI রেকর্ড করা হয় ৩৪২। এদিকে ওই একই সময়ে দিল্লিতে AQI ছিল ২৯৯ তে। আর সেই দেখে মাথায় হাত পরিবেশবিদদের। প্রশ্ন উঠছে, এখন শিবে শুরু হয়েছে শীত, আর তাতেই এই দূষণ, তাহলে ভবিষ্যতে যখন আরও শীত পড়বে তখন দূষণের মাত্রা কতদূর পৌঁছবে।
চিন্তায় পরিবেশবিদরা
কলকাতায় দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়া নিয়ে পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দুষেছেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে। তাঁর কথায়, “এটা সম্পূর্ণ আমাদের গাফিলতি। দিল্লির ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল। ময়দানে, বিশেষ করে ভিক্টোরিয়ার চারপাশে মেট্রোরেলের কাজ চলছে। সেই কাজ যেভাবে ঢেকে রাখা দরকার ছিল, সেটা করা হয়নি। ফলে চারদিকে ধুলো ছড়াচ্ছে।” এছাড়াও তাঁর আরও সংযোজন, “ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য জল ছেটানোর কোনও সিস্টেম রাখা হয়নি। মা ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে এখনও বেশ কিছু পুরনো ডিজেল গাড়ি চলছে। সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা রাজ্যের কাজ।”
আরও পড়ুন: বাবরি মসজিদ নির্মাণের অনুদানে হুমায়ুনের অ্যাকাউন্টে বিদেশি অর্থ, তলব SBI-র
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ১৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি দূষণ যেকোনও শহরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সেখানে দাঁড়িয়ে ভারতে এর পরিমাণ ৬০ মাইক্রোগ্রাম। আর বর্তমানে কলকাতার AQI সেই মাত্রার পাঁচ গুণ বেশি, তাই স্বাভাবিকভাবে চিন্তায় পড়েছে সকলে। তাই পরিবেশবিদদের মতে, এখনই যদি দূষণ নিয়ে সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় হয় তাহলে শহরের অন্যান্য অংশে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।