বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি শুল্ক নিয়ে মার্কিন আদালতে বড় ধাক্কা খেয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিগত দিনগুলিতে বিশ্ব অর্থনীতিকে যেভাবে তিনি উল্টে পাল্টে দিয়েছেন তা আসলেই বেআইনি। সে মর্মেই, মার্কিন শাসকের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে আমেরিকার আপিল আদালত। এবার ট্রাম্পের আরও একটি পদক্ষেপকে অবৈধ বলে দাবি করল মার্কিন ফেডারেল কোর্ট।
ফের আদালতে মুখ পুড়ল ট্রাম্পের
CNN এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সেই পদক্ষেপকে এবার সরাসরি অবৈধ বলে ঘোষণা করল ফেডারেল আদালত। শুধু তাই নয়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান আটকে রাখার অপরাধে ট্রাম্প প্রশাসনকে কার্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন বিচারক।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে ইজরায়েল বিরোধী আন্দোলন চলছে। ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। মূলত সেই সব ঘটনাগুলিকে আটকাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের সেই নির্দেশ মানতে রাজি ছিল না কর্তৃপক্ষ। আর তারপরই একেবারে রেগে অগ্নি শর্মা হয়ে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রিপোর্ট বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্দেশ না মানায় প্রথমেই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির 200 কোটি ডলারের অনুদান বন্ধ করে দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এরপর চাপ বাড়িয়ে আরও 45 কোটি ডলারের অনুদান আটকে রাখে তারা। জানা গিয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে যাওয়া অনুদানও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সেই সব ঘটনাকে সামনে রেখে ট্রাম্পের অনুদান বন্ধের পদক্ষেপকে অবৈধ এবং অন্যায্য বলে দাবি করেছেন ফেডারেল কোর্টের বিচারক। শুধু তাই নয়, যত দ্রুত সম্ভব এমন নির্দেশ তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে আদালতের তরফে।
অবশ্যই পড়ুন: উঠে গেল GST-র দুই স্ল্যাব, আমজনতার সুবিধা হলেও কতটা ক্ষতি হবে রাজস্বের?
বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তিতে একমত ফেডারেল কোর্ট
গাজায় প্যালিস্তিনিওদের উপর ইজরায়েল সেনার অত্যাচার এবং নৃশংসতার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। মূলত গাজাকে দখলমুক্ত করা এবং সেখানকার সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার বন্ধ করার দাবিতেই আন্দোলনে পা বাড়িয়েছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেটাই ভাল চোখে নেননি ট্রাম্প।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তি ছিল, পড়ুয়ারা আন্দোলন করায়, সেগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল আমেরিকার সরকার। তবে তা না মানায় প্রতিশোধ নিতেই আর্থিক অনুদান বন্ধ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন যুক্তিতে পুরোপুরি সহমত পোষণ করেছেন ফেডারেল কোর্টের বিচারপতি। তাঁর দাবি, ট্রাম্পের এমন নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রভাব ফেলবে। দ্রুত নির্দেশ বাতিল করা হোক।