সৌভিক মুখার্জী, শ্যামনগর: গত তিনদিন ধরে উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরে চলছে বইমেলার উৎসব (Shyamnagar Book Fair)। তবে মঙ্গলবার বাংলাদেশের অশান্তির আগুন ছড়াল শ্যামনগরেই। এদিন হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়ে উত্তেজনা, এবং বাংলাদেশের বই বিক্রির প্রতিবাদে তান্ডব দাগে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। অভিযোগ উঠেছে, মেলায় একটি বুক স্টলে বাংলাদেশের প্রকাশিত একাধিক বই রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। তাতেই আপত্তি জানায় হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, এবং মেলা কর্তৃপক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়।
বাংলাদেশের বই শ্যামনগরের বইমেলায়
জানা গিয়েছে, প্রতিবছরের মতো এ বছরও শ্যামনগরে গঙ্গার পাড়ে এই বইমেলা শুরু হয়েছে। এবার ২২ তম বর্ষ। দেশ-বিদেশের বহু লেখকের বই বিক্রি হচ্ছে সেখানে। তবে জানা যাচ্ছে, ওই স্টলে বাংলাদেশের একাধিক কবি, সাহিত্যিকের বই ছিল। তা দেখেই হিন্দু জাগরণ মঞ্চ ক্ষুব্ধ হয়। তারা যুক্তি দেয়, বাংলাদেশে দিনের পর দিন সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হচ্ছে। তাই সেদেশের বই এখানে বিক্রি মানেই হিন্দুদেরকে আঘাত করা। অবিলম্বে সেখানকার বইগুলি সরিয়ে ফেলার দাবি জানান তারা। এমনকি মেলার আয়োজকদের ঘিরেও দেখা যায় বিক্ষোভ।
আরও পড়ুন: মাত্র ৪৪ টাকাতেই এক বছর সক্রিয় থাকবে সিম! দারুণ প্ল্যান Jio-র
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে ভেবে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জগদ্দল থানার পুলিশ। পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসে। উভয়পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মেলা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বইমেলায় অংশগ্রহণকারী স্টলগুলিকে সাধারণ নিয়ম মেনেই বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়টি আগে নজরে আসেনি। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তারা আশ্বাস দিয়েছেন, জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ যাওয়ার টিকিট কাটা? জানুয়ারিতে পরপর বাতিল ট্রেন! তালিকা দিল রেল
এদিকে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যদের দাবি, মেলা কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে এই স্টলগুলি বসিয়েছে। তাদের উদাসীনতার জন্যই এহেন পরিস্থিতি। ভবিষ্যতে যদি এই বইগুলি মেলায় রাখা হয়, তাহলে আরও বড়সড় আন্দোলনের পথে হাঁটবে তারা। এমনকি বিক্ষোভ চলাকালীন মেলা প্রাঙ্গণে স্লোগান ওঠে এবং কিছু সময়ের জন্য দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আবার অনেকের মতে, কোনও বই শুধুমাত্র দেশের পরিচয়ের কারণে নিষিদ্ধ করা উচিত নয়। তবে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনার প্রেক্ষিতে এই আন্দোলন যথেষ্ট দাবিদার।