সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নির মৃত্যুতে নয়া মোড়! বৌমার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের ঠাকুমার

Alipore Mystery Death Case

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কিছুদিন আগে আলিপুরে আলমারির ভিতর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার (Alipore Mystery Death Case) হয়েছিল আরজি কর-কাণ্ডের দোষী সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নির দেহ। সেই ঘটনায় এ বার পুলিশের দ্বারস্থ হলেন মৃত কিশোরীর ঠাকুমা। নিজের ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধেই দায়ের করলেন খুনের অভিযোগ! পুলিশ সূত্রে খবর, নাতনির এই অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা তথা ওই নাবালিকার ঠাকুমা প্রতিমা সিং, তাই সে এবং পাড়ার বেশ কয়েকজন মিলে খুনের মামলা দায়ের করল। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

আলমারির ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছিল দেহ

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে আলিপুর থানার অন্তর্গত বিদ্যাসাগর কলোনীর বাসিন্দা বছর এগারোর এক নাবালিকার দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ঘরের ভিতর আলমারির রড থেকে ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এরপরই তড়িঘড়ি কিশোরীকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে পরিচয় সূত্রে জানা যায় ওই নাবালিকা আসলে আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি। সঞ্জয়ের বড় দিদি ববিতা ও ভোলা সিংয়ের সন্তান ছিল ওই কিশোরী।

কিশোরীর বাবা মায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ

জানা যায়, সঞ্জয় রায়ের বড় দিদি অর্থাৎ মৃত কিশোরীর আসল মা নাকি পারিবারিক অশান্তির জেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন। এরপর বড় দিদির মৃত্যুর পরে নাকি তাঁর মেয়ের দেখাশোনা করতেন খোদ সঞ্জয়ের ছোট দিদি পূজা। এবং পরে নিজের জামাই বাবুর সঙ্গেই বিয়ে করেন তিনি। তারপরেই শুরু হয় অশান্তি। প্রতিদিন সৎ মেয়ের উপর অত্যাচারের করত সৎ মা এবং নিজের বাবা। আর সেই অভিযোগ কিশোরী তাঁর ঠাকুমাকে করত। ঠাকুমা এও জানিয়েছিল যে পূজা নিজের সৎ মেয়েকে প্রায়ই মারধর করেন। এমনকী, কালীপুজো ও দীপাবলির আগে মেয়েকে বেল্ট দিয়ে পিটিয়েছিলেন! প্রতিবেশীদের মুখেও একই কথা শোনা যায়।

আরও পড়ুন: SIR করতে গেলে জুতো, ঝাঁটা দিয়ে পেটানোর নিদান বাঁকুড়ার TMC নেতার! পাল্টা দিল বিজেপি

খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ঠাকুমা

প্রতিবেশীদের দাবি সৎ মা ও বাবার অত্যাচারের কারণেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘যখন তখন মেয়েটিকে মারধর করা হত। ওকে কান্নাকাটি করতে শোনা যেত। বাবা এবং সৎমা, দু’জনেই নাবালিকাকে মারধর করতেন।’’ তাই তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস পঞ্চম শ্রেণীর ওই কিশোরীকে বাবা ও সৎ মা-ই খুন করেছে এবং ঘটনার প্রতিবাদ করতেই কিশোরীর বাবা এবং সৎ মাকে রীতিমত মারধরও করেছিল প্রতিবেশীরা। এরপরই নিজের ছেলে ভোলা সিং ও পুত্রবধূ পূজা সিংয়ের বিরুদ্ধে আলিপুর থানায় নাতনিকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ঠাকুমা। আর এই আবহে ঠাকুমা ছাড়াও লিখিতভাবে ভোলা ও পূজার বিরুদ্ধে তাঁদের মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যাসাগর কলোনির বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও। এই ঘটনায় রুজু হয়েছে মামলা।

Leave a Comment