সব রাজ্যকে ডিটেনশন ক্যাম্প গড়ার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের! জানানো হল কাদের রাখা হবে

Detention Camps In India
Detention Camps In India

কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ দেশের নাগরিক তালিকা সংশোধনী নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সব নিয়ে বিরোধিতাও কম হচ্ছে না সারা দেশ জুড়ে। তবে, সেই সব বিরোধের মাঝেই এবার অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। আর সেই উদ্দেশ্যে, মঙ্গলবার অর্থাৎ ২ সেপ্টেম্বর জারি করা হল একটি নতুন গেজেট নোটিফিকেশন।

কী আছে নতুন গেজেট নোটিফিকেশনে?

দ্য ইকোনোমিক টাইমসের রিপোর্ট মতে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে জারি করা ওই গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী, সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অবৈধ বিদেশিদের জন্য ডিটেনশন বা হোল্ডিং সেন্টার স্থাপন (Detention Camps In India) করতে হবে। এবং বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বহিষ্কার করার আগে তাঁদের গতিবিধি সীমাবদ্ধ করার জন্য ওই ডিটেনশন সেন্টারগুলিতে রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, এতদিন ধরে যে ১৯৬৪ সালের ফরেনার্স (ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার চালু ছিল তার পরিবর্তে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ফরেনার্স অ্যাক্ট, ২০২৫’ কার্যকর হবে, এবং যাবতীয় ক্ষমতা দেওয়া হবে ফরেনার্স (নাগরিক) ট্রাইব্যুনালকে। এই ফরেনার্স (নাগরিক) ট্রাইব্যুনাল গঠিত হবে তিন সদস্যকে নিয়ে। এই তিন সদস্যকে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়োগ করবে, এবং প্রত্যেকের আইনি অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

কীভাবে কাজ করবে ফরেনার্স (নাগরিক) ট্রাইব্যুনাল?

গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী, যদি কোনও সন্দেহভাজন বিদেশি নিজেকে ভারতীয় প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাঁকে ডিটেনশন সেন্টারে রাখার নির্দেশ জারি করবে ওই ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া ‘কেন্দ্র সরকার বা রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন বা জেলা কালেক্টর বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, এই আদেশের মাধ্যমে জানতে চাইতে পারে যে কারা এই আইনের অধীনে বিদেশি।

আরও পড়ুনঃ বেথুয়াডহরি টোল প্লাজায় তুলতেন তোলা! প্রমাণ হতেই সাসপেন্ড নাকাশিপাড়ার সাব ইন্সপেক্টর

গেজেট নোটিফিকেশনে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনও বিদেশিকে গুরুতর অভিযোগ, যেমন সন্ত্রাস, গোয়েন্দা কার্যকলাপ, ধর্ষণ, মানব পাচার, হাওয়ালা, মুদ্রা জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে তাঁদের ভারতে প্রবেশ বা বসবাস থেকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে এবং সে কোনও অনুমতি ছাড়া ভারতে কোনও অঞ্চলে চলাচল করতে পারবে না। এছাড়া বেসরকারি খাতে কিছু সংবেদনশীল ক্ষেত্রে (যেমন: বিদ্যুৎ, জ্বালানী, জল) বিদেশিদের কর্মসংস্থান শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের অনুমোদনের মাধ্যমে করা যাবে।

এই প্রক্রিয়ায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেসিয়াল স্ক্যানের মতো বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা বৈধতা যাচাই ও নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সুস্পষ্ট করবে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করার একটি মূল হাতিয়ার হবে। তবে, অনেকেই মানবাধিকার সহ বিভিন্ন ইস্যু দেখিয়ে এই গেজেটের বিরোধিতা করা শুরু করেছে।

Leave a Comment