সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা, উচ্চতর পেনশনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশও অমান্য EPFO-র!

Employees’ Provident Fund Organisation

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: কর্মচারীদের পিএফ পেনশনের ক্ষেত্রে গাফিলতি করছে ইপিএফও (Employees’ Provident Fund Organisation)। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের এক সরকারি চিঠিতে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে, কেন্দ্র সরকারের নির্দেশিকাকে অগ্রাহ্য করেই ইপিএফও প্রক্রিয়াগত বাধা সৃষ্টি করছে। যার ফলে সুপ্রিম কোর্টের ২০২২ সালের রায় বাস্তবায়ন কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠছে।

বলাবাহুল্য, ২০২৩ সালের ৩১ মে শ্রম মন্ত্রকের সেক্রেটারি দ্বারা লেখা ওই চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, ইপিএফও নিজেদের প্রয়োজনীয় ফরম্যাট তৈরি করেনি। এর মাধ্যমে কর্মী এবং নিয়োগকর্তারা মজুরির ভিত্তিতে পিএফ অবদান জমা দেওয়ার অনুমতি চাইতে পারত। এমনকি বিভিন্ন আঞ্চলিক ইপিএফও অফিসও কোনওরকম অনুমতিপত্র জারি করেনি। যদিও তারা বছরে উচ্চ বেতনের ভিত্তিতে টাকা গ্রহণ করে আসছে।

৬০ মাসের গড় বেতনের ভিত্তিতেই পেনশনের নির্দেশ

শ্রম মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, পদত্যাগ করে অবসরের আগে শেষ ৬০ মাসের গড় বেতন ধরেই পেনশনের হিসাব করতে হবে। তবে এরপর ইপিএফও নির্দেশ দিয়েছিল, ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরের পর যোগ দেওয়া কর্মীদের ক্ষেত্রে ৬০ মাসের গর বেতন হিসাব করা হবে। পাশাপাশি ২০১৪ সালের আগে যোগ দেওয়াদের ক্ষেত্রে আগের নিয়ম অনুযায়ী শেষ ১২ মাসের গড় বেতন হিসাব করতে হবে।

অন্যদিকে ইপিএফও-র নতুন প্রো-রাটা হিসেব পদ্ধতি বলছে যে, ২০২৪ সালের আগে এবং পরে যে চাকরির সময়কাল রয়েছে তা আলাদা করে গণনা করা হবে। আর এতেই ধাক্কা লাগছে কর্মীদের। কারণ, ২০১৪ সালের আগে যে পরিষেবা কাল ছিল তার পেনশন ২০১৪ সালের বেতনে হিসেব করা হচ্ছে। ফলে অনেক কর্মী বহু বছর ধরে তাদের প্রকৃত বেতনের ভিত্তিতে অবদান জমা দিয়ে আসছে। তাই তারা বেশি পেনশন আশা করছিলেন। তবে প্রো-রাটা পদ্ধতি সেই আশা সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে।

বলাবাহুল্য, ২০২২ সালের ৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে, যোগ্য সমস্ত কর্মীকে উচ্চহারে পিএফ পেনশন দিতে হবে। তবে শ্রম মন্ত্রকের চিঠি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত একটিও আবেদনযোগ্য হিসেবে গণ্য করা হয়নি। আর তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই পর্যন্ত প্রায় ১৫ লক্ষ ৯০ হাজার ৪৭৩টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে একটিও কেস উচ্চ পেনশনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: মেলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত! একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণী পাসেই স্কলারশিপ দিচ্ছে টাটা

বর্তমানে কর্মীদের দাবি কী?

এই ঘটনার পর উচ্চ পেনশন প্রাপ্য কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই দাবি করছে যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে। এমনকি পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি ইপিএফও-র গাফিলতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের ন্যায্য পেনশন দিতে হবে। এখন দেখার বিষয়ে, শ্রম মন্ত্রকের এই চিঠির পর ইপিএফও কী পদক্ষেপ নেয়।

Leave a Comment