প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ফের সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ! জনগণের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ রাজ্য সরকারের কমিউনিটি টয়লেট নির্মাণ হতে চলেছে খোদ সাগরদিঘীর (Sagardighi) পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির ভেতরে! খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু হয়ে গেল কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান রোজিনা বেগম, এমনকি নির্মাণ নিয়ে দিলেন স্বপক্ষে যুক্তি।
ঘটনাটি কী?
প্রতি বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ, তার ব্যবহার নিশ্চিত করা-সহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সার্বিক পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ে তুলতে রাজ্য সরকার ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্প চালু করেছিল। কিন্তু এবার সেই প্রকল্পের অসৎ ব্যবহারের অভিযোগ উঠল কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রোজিনা বেগমের বিরুদ্ধে। স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি ‘কমিউনিটি টয়লেট’ তৈরি করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চলতি বছর মে মাসের সাগরদিঘী ব্লকের কাবিলপুর পঞ্চায়েতের জন্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল । কিন্তু সরকারি জমিতে ‘কমিউনিটি টয়লেট’ তৈরি করার পরিবর্তে নিজের বাড়িতেই ওই শৌচাগারের নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন বাম-কংগ্রেসের নির্বাচিত জোটের প্রধান। আর তা দেখেই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ অস্বীকার পঞ্চায়েত প্রধানের
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে কমিউনিটি টয়লেট নির্মাণ নিয়ে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জনগনের স্বার্থে নয় নিজের স্বার্থে এই অবৈধ নির্মাণ করছেন কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রোজিনা বেগম। কিন্তু সেই অভিযোগ মানতে নারাজ পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁর মতে, ‘ প্রচুর মানুষের আনাগোনা হয় বাড়িতে। পাশেই স্কুল আছে। ১৭ ফুট চওড়া রাস্তা আছে। জনসাধারণের কথা ভেবেই আমার জায়গায় ট্যাঙ্ক দিয়েছি। দরজাটা বাইরে রেখেছি। কোনও ভুল কাজ করিনি।” এখানেই তিনি চুপ থাকেননি। প্রধান আরও বলেন যে, “আমার বাড়িতে মেম্বাররা আসে, থানা, ক্যাম্প থেকে লোক আসে। মেম্বারদেরও দাবি ছিল কমিউনিটি টয়লেট এখানে নির্মাণ করা হোক। সেই দাবি রক্ষার্থে এই উদ্যোগ।”
আরও পড়ুন: নিরাপদে ভারতে থাকতে পারবে মুসলিম বাদে বাকিরা! CAA নিয়ে নয়া সংশোধনী প্রকাশ কেন্দ্রের
কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রোজিনা বেগমের ‘অবৈধ’ কাজের সপক্ষে এইরূপ অদ্ভুত যুক্তি পেশ করায় রাজনৈতিক শিবিরেও নানা শোরগোল পড়েছে। সাগরদিঘী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নূরে মেহবুব আলম জানিয়েছেন, “কাবিলপুরের প্রধান আমার হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার জন্য একাধিকবার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় আমি তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করাইনি।” এছাড়াও এলাকাবাসীর অভিযোগ সিপিএমের প্রতীকে জেতার পর থেকেই রোজিনা বেগমের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। কিন্তু এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ফের প্রশ্ন উঠছে কেন সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন সরকারি সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে।