সরবে কলকাতা বিমানবন্দরে থাকা বাঁকড়া মসজিদ? দাবি উঠতেই মুখ খুলল

Kolkata Airport

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বঙ্গে কর্পোরেট সংস্থার পরিসংখ্যানের পর সম্প্রতি রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ ও রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য কলকাতা বিমানবন্দরে (Kolkata Airport) মসজিদ নিয়ে একটি গুরুতর প্রশ্ন তোলেন। যার ফলে খবরের শিরোনামে ফের উঠে এল কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে দ্বিতীয় রানওয়ের মাত্র ৩০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত ‘বাঁকড়া মসজিদ’ প্রসঙ্গ। প্রশ্ন ওঠে যাত্রী নিরাপত্তা এবং বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে। এবার সেই প্রশ্নের আরও একবার কড়াকড়ি উত্তর দিল কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক।

বাঁকড়া মসজিদ নিয়ে ফের বিতর্ক

উল্লেখ্য, কলকাতা বিমানবন্দরের কাজ শুরু হওয়ার সময় তখনও পশ্চিমে বাঁকড়া মসজিদটি ছিল। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে যখন বিমান চলাচল বাড়তে শুরু করে, তখন বিমানবন্দর পশ্চিম দিকে সম্প্রসারণ করা হয় এবং দ্বিতীয় রানওয়ে তৈরি হয়। এরপর ১৯৬২ সালে রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ করে এয়ারপোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে হস্তান্তর করে এবং এই মসজিদটিকে সম্ভবত সংরক্ষণ করার শর্ত রাখা হয়েছিল। এরপর মসজিদটি সরিয়ে বিমানবন্দরের বাইরে কাছাকাছি কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেও মানতে চায়নি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়। তাই বাধ্য হয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মসজিদ না সরিয়ে রানওয়ের দিক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অর্থাৎ মসজিদটি ঐতিহাসিক হলেও বিমানবন্দর সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা। তাই ফের এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

কী বলছেন কেন্দ্রীয় বিমান পরিবহন মন্ত্রক?

জানা গিয়েছে, রাজ্যসভায় রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের ফের এই মসজিদ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক স্পষ্ট জানায়, “কলকাতা বিমানবন্দরের সেকেন্ডারি রানওয়ের কাছে একটি মসজিদ রয়েছে, যা বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত বাধা সৃষ্টি করছে।” তিনি আরও বলেন যে, এই বাঁকড়া মসজিদ স্থাপনের কারণে বিমানবন্দরের সেকেন্ডারি রানওয়ের থ্রেশহোল্ড ৮৮ মিটার পিছিয়ে দিতে হয়েছে। এর ফলে জরুরি পরিস্থিতিতে বা যখন প্রাইমারি রানওয়ে ব্যবহারযোগ্য থাকে না, তখন সেকেন্ডারি রানওয়ের সম্পূর্ণ সক্ষমতা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এমনকি বিমান বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছে যে, রানওয়ের সামনে বা পাশে কোনও স্থাপত্য থাকলে তা বিমান ওঠানামার সময় উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করে। তাই ফের এই তথ্য সামনে আসতেই রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন: হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি অবধি ছুটবে মেট্রো? মুখ খুলল রেলমন্ত্রক

কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের জবাব প্রকাশিত হতেই শমীক ভট্টাচার্য বলেন “যাত্রীদের নিরাপত্তা কখনোই রাজনৈতিক তোষণনীতির কাছে বলি হতে পারে না। বিমানবন্দর একটি সুরক্ষিত এলাকা, সেখানে কোনও বাধা থাকলে তা দেশের নিরাপত্তা এবং যাত্রীদের জীবনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। রাজ্য সরকারকে এই সমস্যার গুরুত্ব বুঝতে হবে।” একই সুর শোনা যায় বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের গলায়। তিনি বলেন, “অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক স্বীকার করেছে যে একটি মসজিদ দ্বিতীয় রানওয়ের কাছে অবস্থিত। এটি নিরাপদ অপারেশনে বাধা দিচ্ছে… প্রাথমিক রানওয়ে অনুপলব্ধ থাকলে জরুরি পরিস্থিতিতে রানওয়ের ব্যবহারকে প্রভাবিত করছে।” যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট মন্তব্য করেনি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

Leave a Comment