প্রীতি পোদ্দার, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরে (Durgapur) মেডিক্যাল পড়ুয়া ধর্ষণ মামলা নিল এক বড় মোড়। ধৃত পাঁচ অভিযুক্তকেই এবার সরাসরি শনাক্ত করলেন নির্যাতিতা। আদালতের নির্দেশ মেনে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার জেলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই শনাক্তকরণ পর্ব হয়। যেখানে এই মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনকে নির্যাতিতা একে একে শনাক্ত করেন বলে একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায় নির্যাতিতার সহপাঠীকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আইনজীবী পার্থ ঘোষ।
দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডে টিআই প্যারাড প্রক্রিয়া
গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, আদালতের নির্দেশে ধর্ষণ-কাণ্ডে টিআই প্যারেড হয় দুর্গাপুর উপ-সংশোধনগারে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নির্যাতিতা চিকিৎসককে এবো ও তাঁর মাকে নিয়ে যাওয়া হয় টিআই প্যারাডের জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আসেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক রাজীব সরকার। তারপর টিআই প্যারেড প্রক্রিয়া শুরু হয়। হাজির করানো হয় দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ মূল অভিযুক্তকে। সময় নষ্ট না করে নির্যাতিতা ওই বেসরকারি মেডিক্যাল সংলগ্ন এলাকার ধৃত পাঁচ যুবককে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করেন। এমনকি পাঁচ অপরাধীর মধ্যে থেকে মূল অপরাধীকেও চিহ্নিত করেন নির্যাতিতা। সেই সঙ্গে বাকিদের ভূমিকাও বর্ণনা করেন।
সহপাঠী ছাত্র ওয়াসিফ আলিকে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি
রিপোর্ট অনুযায়ী, এদিন দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডের ধৃত অভিযুক্তদের সঙ্গে হাজির করানো হয়নি নির্যাতিতার সহপাঠী যুবককে। কারণ, ছাত্রীর সহপাঠী তিনি, তাঁকে তো আগে থেকেই চিনতেন। এমতাবস্থায় ডাক্তারি ছাত্রীর আইনজীবী পার্থ ঘোষ দাবি করেছেন, ধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত সহপাঠী ছাত্র ওয়াসিফ আলির পূর্বপরিচিত নাকি গ্রামের এই পাঁচ যুবক। বিজড়া গ্রামে নিয়মিত যাতায়াত ছিল সহপাঠীর। অভিযোগ ওই অভিযুক্ত সহপাঠী নিয়মিত বিজড়া গ্রামে যেতেন ধর্মীয় কাজে। সেখানেই প্রথম ধৃত শেখ ফিরদৌসের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। তারপরেই বাকিদের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। আর তখনই সহপাঠী তাঁদের জন্য কন্ডোম নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই এই ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে সহপাঠী ওয়াসেফ আলিকেই চিহ্নিত করছে নির্যাতিতার আইনজীবী।
আরও পড়ুন: ‘আমরা তৃণমূল করি, শুধু আমার ছেলেকেই ধরেছে!’ বিস্ফোরক নারায়ণ হালদারের বাবা ভূপতি
প্রসঙ্গত, এই মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে বিভাস চট্টোপাধ্যায়কে। ওইদিন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্যারেডে এদিন ধৃত পাঁচ যুবক ছাড়াও আরও তিনজনেকে ‘ডামি’ হিসাবে রাখা হয়েছিল। সেই তথ্য জানানো হয়নি নির্যাতিতাকে। কিন্তু মাত্র পাঁচ মিনিটেই প্যারেডে দেখামাত্রই পাঁচ যুবককে শনাক্ত করেন ছাত্রী। ঘটনার পুরো প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে ভবিষ্যতে তদন্তের জন্য। উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে প্রথমে শেখ রিয়াজউদ্দিন এবং শফিক শেখকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ ৷ তার পরেরদিন শেখ ফিরদৌস, শেখ নাসিরউদ্দিন এবং অপু বাউড়ি নামে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ৷ অন্যদিকে নির্যাতিতার সহপাঠীকে গ্রেফতার করা হয় ওই দিন রাতেই।