সাংবাদিকের উপর হামলা, পার্ক সার্কাসে দুষ্কৃতীদের ছুড়ির কোপে রক্তাক্ত কিশলয় মুখার্জী

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সাংবাদিকের কণ্ঠস্বর রোধ করতে এবার চালানো হল ছুরি! হ্যাঁ, এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। রিপাবলিক বাংলার জনপ্রিয় অ্যাঙ্কর কিশলয় মুখার্জী (Kishalay Mukherjee) মঙ্গলবার রাতে কলকাতার পার্ক সার্কাস সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন! 

জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের ছুড়ির কোপে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আর এই ঘটনায় শহর জুড়ে উদ্বেগের পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে যে, পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ নাগরিক রাস্তাঘাটে ঠিক কতটা নিরাপদ?

কী হয়েছিল গতকাল রাতে?

গতকাল, অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন রিপাবলিক বাংলার জনপ্রিয় সাংবাদিক কিশলয় মুখার্জী। পার্ক সার্কাসের মতো ব্যস্ত এলাকায় আচমকা তার ওপর দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়। সাংবাদিক নিজেই ফেসবুকে লাইভে আসেন এবং বলেন, তার পার্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় আর বাঁধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপ বসানো হয় তাঁর গায়ে। 

তিনি লাইভে বলেন, “পার্ক সার্কাস স্টেশনে আমার উপরে ছুরি চালানো হয়েছে। যদি আমি মরে যাই, তার জন্য লাইভে আসলাম।” রক্তাক্ত অবস্থায় কিশলয়কে দ্রুত স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আর বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

সবথেকে বড় ব্যাপার, এই ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো রকম গ্রেফতারের ঘটনা সামনে আসেনি। তাই এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ নাগরিক।

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনার তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি নেতারা। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার রিপাবলিক টিভিকে বলেছেন, “সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করাতেই হয়তো এরকম হামলা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা দিনের পর দিন ভেঙে পড়ছে। কিশলয় মুখার্জী চুপ ছিলেন না। তিনি সত্য কথা সবার সামনে তুলে ধরেছেন। তাই তিনি নিশানায় পড়লেন। এখন সময় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের।” 

আরও পড়ুনঃ ৫০০ টাকা দরপতন সোনার, ওদিকে ১৬৫০ টাকা কমল রুপোর দাম! আজকের রেট

পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক এবং পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, একজন সাংবাদিক রাজ্যেই যদি নিরাপদ না থাকতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? এটা শুধুমাত্র সাংবাদিকের উপর হামলা নয়, বরং বাকস্বাধীনতার উপরেও সরাসরি আঘাত।”

আর এই ঘটনার জেরে ফের একবার স্পষ্ট চিত্র উঠে আসছে যে, বাঙালির চেনা শহরেই অন্ধকারে বিপদের ঘনঘটা। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাংবাদিক, এমনকি প্রবীণ নাগরিক বা নারী, কেউই নিরাপদ নয়। পাশাপাশি প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখন দেখার তদন্তে কী উঠে আসে।

Leave a Comment