সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: শীত পড়তেই ডিমের দাম ছক্কা (Egg Price Hike) হাঁকাল। হ্যাঁ, প্রতি পিস এবার ৮ টাকায় গিয়ে ঠেকল ডিম। আর খুচরো বাজারে ডিমের দাম বাড়াতে মিড-ডে মিল নিয়ে বাড়ছে চিন্তা। কারণ, সরকার ডিম প্রতি বরাদ্দ করে সাড়ে ৬ টাকা। আর সেই কারণে স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে এবার মিড-ডে মিলে ডিম দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়েও এবার সরব হয়েছে শিক্ষক এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
বিপাকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা
বলাবাহুল্য, ডিমের দাম বাড়ার কারণে সবথেকে বেশি বিপাকে পড়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। এ বিষয়ে রঘুনাথপুর ২ ব্লকের কর্মীরা মঙ্গলবার মিড-ডে মিলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। আর স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, গর্ভবতী মহিলা থেকে শুরু করে শিশুদের জন্য প্রতিদিন মিড-ডে মিলে ডিম দেওয়া হয়। তবে বাজারদরের সঙ্গে সরকারি বরাদ্দের ফারাক বেশি হয়ে যাওয়ায় তা আর সম্ভবপর হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাঁকুড়া মিউনিসিপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধনচন্দ্র ঘোষ বলেছেন, প্রতিদিন ১৫০ জন ছাত্র মিড-ডে মিল খায়। আর তাদের জন্য ১৫০০ টাকা বরাদ্দ। গ্যাস থেকে শুরু করে অন্যান্য মসলা, আনাজপাতি বা সবজিতে খরচ বেশি হয়ে যায়। তাতে ডিম দিতে গেলে আরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সরকার বরাদ্দ বাড়ালে কোনওরকম সমস্যা হতো না।
বলাবাহুল্য, বর্তমানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছয় দিন খাবার দেওয়া হয়। আর তার মধ্যে তিন দিন খিচুড়ি এবং ডিম, তিন দিন ভাত-ডাল-সবজি এবং ডিম সিদ্ধ দেওয়া হয়। আর গর্ভবতী এবং প্রসূতি মহিলাদের প্রতিদিন একটি করে গোটা ডিম আর শিশুদের তিন দিন অর্ধেক অথবা গোটা ডিম দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে কর্মচারীররা অভিযোগ করছে যে, একটি ডিমের জন্য সাড়ে ছয় টাকা বরাদ্ধ। তবে এখন ডিমের দাম পৌঁছে গিয়েছে ৮ টাকা, আর সবজির জন্য ১১ পয়সা পাওয়া যায়। এতে কীভাবে সবজি দেওয়া যাবে? আমরা সরবরাহ করতে হিমসিম খাচ্ছি।
এদিকে দিনের পর দিন জ্বালানির খরচ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তিন মাসের বিল জমা দিলেই এক মাসের টাকা মিলছে। আর কোথাও কোথাও ডিম না পেলে স্থানীয়রা আক্রমণ করছে কর্মীদের উপর। এমনকি গোটা রাজ্যজুড়ে এরকম পরিস্থিতি চলে আসছে। তাই বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়ে শিক্ষক থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সরব হয়েছে। এখন দেখার, সরকার এ বিষয়ে কোনওরকম পদক্ষেপ নেয় কিনা।