সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: নিজের মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের বিচার চেয়ে নবান্ন অভিযানের (Nabanna Abhijan) ডাক দিয়েছিল তিলোত্তমার মা-বাবা। নেতৃত্ব দিয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। তবে সেখানেই গুরুতর চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নির্যাতিতার মা। এমনকি তাঁর বাবাকেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে একই হাসপাতালে। অভিযোগ উঠছে, মিছিলে যোগ দেওয়ার সময় পুলিশ নাকি রাস্তায় ফেলে তাদেরকে মারধর করেছে।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
HT বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার দুপুর নাগাদ নবান্ন অভিযানের মিছিলে পার্কস্ট্রিটের কাছে পৌঁছতেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। আর সেখানেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযোগ করেন যে, সেই সময় একাধিক পুলিশকর্মী তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং ভোঁতা কিছু দিয়ে আঘাত করে।
তবে এরপরও তাঁরা মিছিল থেকে সরে আসেনি। হ্যাঁ, তাঁরা মিছিলে থাকার সিদ্ধান্তেই অনড় থাকে। কিন্তু রেসকোর্সের কাছে অবস্থান চলাকালীন নির্যাতিতার মা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সহযাত্রীরা চোখে-মুখে জল দিয়ে তাঁর সেবা করার চেষ্টা করলেও তাতে অবস্থার উন্নতি হয়নি।
এরপর নির্যাতিতার বাবা-মাকে দ্রুত বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে জরুরী বিভাগে প্রথমে শারীরিক পরীক্ষা শুরু হয়। সূত্র মারফৎ খবর, নির্যাতিতার মায়ের কপালে বড়সড় ফোলা রয়েছে, যা দেখে চিকিৎসকদের ধারণা যে, ভোঁতা কোনো জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, অভয়ার মায়ের পিঠে একাধিক কালশিটে দাগ এবং হাতে চোট লক্ষ্য করা গিয়েছে। পাশাপাশি তাঁর মাথার জন্য 24 ঘন্টা সতর্কমূলক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে সিটি স্ক্যান করা হয়েছে এবং এমআরআই করানো হবে। এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, আঘাতের ধরণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে যে, স্বাভাবিকভাবে পড়ে যাওয়ার ঘটনা নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করা হয়েছে।
হাসপাতালে শুয়ে নির্যাতিতার মা বলেছেন, আজ আমায় ওরা মেরেছে। অনেক পুলিশ রাস্তায় ফেলেই আমাকে মারল। তবে কেন মারল আমি জানতে পারলাম না। আমার মেয়েকে কেন মেরে ফেলা হল সে নিও প্রশাসন চুপ। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, কোনোরকম শারীরিক আঘাত তাঁদের উপর করা হয়নি।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাসপাতালে গিয়ে তাদেরকে দেখেও আসেন। তিনি বলেছেন, অভয়ার মা’কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আঘাতও গুরুতর। তবে জ্ঞান রয়েছে। চোখের জল থামছে না। সম্ভবত ন্যায়ের দাবিতে এই মিছিলে আসাতেই মার সহ্য করতে হয়েছে। চিকিৎসকরা বর্তমানে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন।